জুড়ীতে কালনীগড়-পিংলা রাস্তার বেহাল দশাঃ২০গ্রামের ভোগান্তি

    0
    262

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৬মে,এম এম সামছুল ইসলামঃ “সব কাজে সরকারের উপর নির্ভরশীল না হয়ে কোনো কোনো কাজের উদ্যোগ নিজেরাই নিতে হয়” এ স্লোগানকে সামনে রেখে হাকালুকি হাওর পাড়ের কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ করে। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড়-পিংলা রাস্তাটি বিগত ৮/৯ বছর পূর্বে অত্রা লের কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ করে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ওইখানে যাতায়াতের জন্য কোনো রাস্তা ছিলনা। ওই রাস্তাটি জুড়ী-দাশের বাজার বিকল্প পাকা সড়কের কালনীগড় বাজারের সাথে সংযুক্ত।

     এ অঞ্চলের প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত, মালামাল পরিবহনের জন্য খাগটেকা খাল থেকে পিংলা বিল পর্যন্ত যে নালাটি মিলিত হয়েছে তা থেকে মাটি খনন করে সে মাটি ভরাট করে নালার উত্তর পাড় দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ করেন।

    ওই সময় থেকে উপজেলার কালনীগড়, খাগটেকা, আমতৈল, বাছিরপুর, চালবন, আজিমগঞ্জ, শালদিঘাট, রফিনগর, সুজানগর, রতুলী, দক্ষিণভাগ, কলাজুরা, জামকান্দীসহ প্রায় ২০গ্রামের কৃষক হাকালুকি হাওর পাড়ের বিভিন্ন জমি থেকে ২ হাজার হেক্টর অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশ বোরো ধান কেটে ওই রাস্তা দিয়ে আনা নেয়া করেন। নাম মাত্র ওই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা বাশেঁর কাি , বাং (ভার), ঠেলাগাড়ী, রিক্শা, পিকআপসহ অন্যান্য ছোট ছোট বাহনে করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হাকালুকির বোরো ধান কৃষকদের বাড়ীতে তোলেন।

    এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ওই রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে গেলে নৌকার সাহায্যে ধান আনা নেয়া করতে হয়। নানা সমস্যা আর রাস্তার কাদায় একাকার হয়ে কালনীগড়-পিংলা রাস্তাটি খুবই বেহাল দশা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, যা স্বচক্ষে না দেখলে অনুমান করা যাবে না। বর্তমানে ওই রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশই খানা -খন্দে ভরপুর হওয়ায় জনসাধারণ ও মালামাল পরিবহণে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে ওই রাস্তা দিয়ে রিক্শা, টেম্পু, সিএনজি, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল ও পায়ে হেঁটে জনসাধারণ কোনো রকমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় রাস্তাটির আরোও করুন দশা শুরু হয়।

    সরেজমিনে ঘুরে কথা হলে উপজেলার শালদিঘাট গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান (৭২), খাগটেকার অমর চন্দ্র দাস (৫৫), আমতৈলের সাধন দাস (৪২), কালনীগড়ের রঞ্জিত দাস (৫০) ও বাছিরপুর গ্রামের বাবুল মিয়া (৪৭) জানান, হাকালুকি হাওর পাড়ের বোরো ধানসহ অন্যান্য কাজে কালনীগড় পাকা ব্রীজ থেকে পিংলা বিল পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা তৈরী করি। শুকনো মৌসুমে জনসাধারণের যাতায়াত ও মালামাল পরিবহণ কোনো রকমে করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই ভোগান্তির শেষ থাকেনা।

    তারা আরো জানান, একসময় বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে বোরো ধান আনা নেয়া করতে পারলেও বর্তমানে খাগটেকা খালে স্লুইসগেট নির্মাণ করায় আমরা এখন বহু সমস্যায় ভুগছি। রাস্তাটির করুন দশায় ধানসহ অন্যান্য পন্য আনা নেয়ায় দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এব্যাপারে পশ্চিম জুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মঈনউদ্দিন মইজন বলেন, অত্রা লের কৃষকসহ জনাসাধারণের কথা বিবেচনা করে ওই রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।

    তাই রাস্তাটি নির্মানে আমরা নতুন বাজেটে এনেছি। অত্রা লের জনসাধারণ ওই রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ করে কৃষকদের ভোগান্তি দূর করতঃ তাদের অধিকার আদায়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।