জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবিতে আবার মুখরিত গণজাগরণ মঞ্চ

    0
    422

    জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে গণজাগরণ মঞ্চ। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা শাহবাগে নির্মিত পাঁচটি অস্থায়ী মঞ্চে স্লোগান দিচ্ছেন।
    তাঁরা বিকেল চারটায় গণজাগরণ চত্বরে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার অবরোধ পালন করবেন তাঁরা। তারা অবরোধ পালনের জন্য ৪০টি ভাগে ভাগ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের মিডিয়া সেলের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ২৩ সংগঠনের হরতালে সমর্থন জানিয়ে ২২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। gono jagoron
    হেফাজতে ইসলামের ঢাকামুখী লংমার্চের প্রতিবাদে এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ২৩টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের ডাকা হরতাল চলছে।
    পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এ হরতালের সমর্থনে আজ শনিবার সকাল পৌনে ১০টায় জাতীয় পতাকা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, রামেন্দু মজুমদার, কাজী ফারুকসহ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক। পরে তাঁরা মত্স্য ভবন এলাকায় অবস্থান নেন। বর্তমানে সেখানে সমাবেশ চলছে। বক্তৃতা চলছে। হরতালের সমর্থনে নানা স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। চলছে গণসংগীত ও কবিতা আবৃত্তি।
    সমাবেশে রামেন্দু মজুমদার বলেন, স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকারের উদাসীনতায় ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী ডালপালা মেলে বড় হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি ওদের হিসাব করেন, জেনে রাখেন, এই মৌলবাদী গোষ্ঠী আপনাদের কখনো ভোট দেবে না। আপনারা আপনাদের পক্ষের শক্তিকে চেনেন। স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া ব্লগাররা আপনাদের শক্তি। আমরা কোনো ধরনের ধর্মের অবমাননা সমর্থন করি না। তাই বলে ব্যক্তির স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাও সমর্থন করি না।’
    কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আজ ঘাপটি মেরে থাকা কিছু সুবিধাবাদী যে প্রতিক্রিয়াশীল লোক তাদের মিত্র হয়েছে, এটা কখনো সম্ভব হবে না। মুক্তিযুদ্ধের একতা শক্তিই আমাদের মুক্তির পথ। সে পথে আমাদের এগোতে হবে।’
    সমাবেশে বক্তারা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি করেন এবং একই সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির নাশকতা সৃষ্টির জন্যই লংমার্চ কর্মসূচি করছে বলে অভিযোগ করেন।
    এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে শিল্পকলা একাডেমী এলাকা থেকে মত্স্য ভবনের দিকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন হেফাজতের কর্মী-সমর্থকেরা। খবর পেয়ে হরতাল আহ্বানকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রস্তুত হলে মত্স্য ভবন এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে সমাবেশে মাইক থেকে নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে পুলিশ মত্স্য ভবন ও শিল্পকলা একাডেমীর মাঝে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের কর্মীদের ফিরিয়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
    গত বৃহস্পতিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ ২৩টি সংগঠন এ হরতালের ডাক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, গণজাগরণ মঞ্চ এবং বেশ কিছু সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এতে সমর্থন দেয়। বর্তমানে ঢাকায় গণপরিবহনসহ কোনো ধরনের গাড়ি চলছে না।