জাফলং বনভূমি এখন সবুজে সমৃদ্ধ:উচ্ছেদ হয়েছে অবৈধ স্থাপনা

0
387
জাফলং বনভূমি এখন সবুজে সমৃদ্ধ:উচ্ছেদ হয়েছে অবৈধ স্থাপনা
জাফলং বনভূমি এখন সবুজে সমৃদ্ধ:উচ্ছেদ হয়েছে অবৈধ স্থাপনা

নূরুজ্জামান ফারুকী বিশেষ প্রতিনিধি:  সিলেট বন বিভাগের সারি রেঞ্জের জাফলং বন বিট এখন সবুজে সমৃদ্ধ। বনের ভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে রোপণ করা হয়েছে নানা হরেকরকমের গাছপালা। যার ফলে নতুন করে সেজেছে এই বিটের বনের ভূমি সবুজের সমারোহে। আর তাতে প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ।

২২ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে জানা গেছে- সারি রেঞ্জের আওতায় জাফলং বন বিটের মোট ৬ হাজার একর ভূমি রয়েছে। যার মধ্যে স্থানীয় লোকজন তামাবিল, সোনাটিলা, রহমতপুর ও কানাইজোড়া এলাকায় প্রায় ১শ’ ৫০ একর বনের ভূমি জবর দখল করে অবৈধভাবে ক্রাশার মেশিন স্থাপন এবং কয়লা ও পাথর রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি করেছিল। যা গত ৩ বছরে সারি রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে একাধিক অভিযানে দখলমুক্ত করা হয়েছে। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শতাধিক স্টোন ক্রাশার মেশিন এবং অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। দখলমুক্ত করার পর সেই ভূমিতে নতুন করে বনায়নের উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। সে অনুসারে উদ্ধার হওয়া বন ভূমিতে সারি রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে জাফলং বিট কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডল রোপণ করে যাচ্ছেন হরেক প্রজাতির গাছের চারা যা এখনও চলমান রয়েছে।

এসব অঞ্চলের টিলা ও সমতল ভূমি এখন ভরে উঠেছে হরেক জাতের বৃক্ষে। যেমন- আকাশমনি, জারুল, শিমুল, কৃষ্ণচুড়া, বহেরা, হরতকি ও রেইন্ট্রির সারিতে। অপরদিকে শেওলারটুক এবং নলজুড়ি হাওর এলাকায় জাফলং বিটের আরও প্রায় দেড় হাজার একর বনের ভূমি জবর দখল করে নেয় স্থানীয় এলাকার প্রভাবশালী চক্র। সম্প্রতি সারি রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে জাফলং বিট কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডল অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে প্রায় ২শ’ ৫০ হেক্টর ভূমি দখলমুক্ত করে বাগান করেছে বন বিভাগ। একই সঙ্গে দখলমুক্ত ৫ হেক্টর ভূমিতে আলাদা করে উপযুক্ত প্রজাতির বাগান যেমন-হিজল, করচ, জারুল, শিমুল ও অর্জুনসহ নানান প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। জাফলং বন বিটের বিরান ভূমি যেন ক্রমান্বয়ে ছেয়ে যাচ্ছে সবুজে। বনবিভাগের বনায়ন কর্মসূচীতে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে প্রকৃতির সবুজ প্রান্তর।

এ ব্যাপারে সারি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিন জানান, এ অঞ্চলের সংরক্ষিত বনাঞ্চল জবরদলের পর বন উজাড় ও ধ্বংস করে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিন ও কয়লা পাথর ডাম্পিং করে আসছিল একটি চক্র। তাদের উচ্ছেদে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান চালিয়ে এসব যায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। জাফলং বন ভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদ্ধারকৃত যায়গায় নতুন করে বনায়ন ও বিভিন্ন জাতের চারা রোপন করা হয়েছে। জাফলং বন ভূমি এখন সবুজে সমৃদ্ধ। তবে, জাফলং বন বিটের আওতায় হাওর অঞ্চলে এখনও প্রায় দেড় হাজার একর ভূমি বেদখল রয়েছে। যা উদ্ধারে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান তবে সমস্যা একটাই কিছু মিডিয়াকর্মী সরজমিন পরিদর্শন না করে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নামে-বেনামে সংবাদ প্রকাশ করেই যাচ্ছেন এতে করে লোক সমাজে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন- আমি সকল মিডিয়াকর্মী ভাইদের নিকট অনুরোধ করে বলতে চাই আপনারা বনবিভাগের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের সংবাদ প্রকাশ করার পূর্বে সরজমিনে স্থান পরিদর্শন করে তারপর যা করার করুন। শুনা কথায় কান না দিয়ে আপনারা ভালো করে জেনে-শুনে তারপর যদি যে কোন ঘটনার সত্যতা পান তখন আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করুন। তা না হলে অযথা মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার জন্য তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান সাংবাদিকদের নিকট।

এ ব্যাপারে জাফলং বিট কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডল বলেন- আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা আসছেন ভালোই হয়েছে আপনাদের নিকট যে অভিযোগ গুলো আছে সেই স্থানগুলো সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখুন কোথায় নতুন করে বসতঘর নির্মাণ হচ্ছে বা কোথায় নতুন করে স্টোন ক্রাশার মেশিন বসানো হচ্ছে। আর আমি জাফলংয় বিটে যোগদানের পর থেকেই বন বিভাগের ভূমি ও অবৈধ স্থাপনা প্রভাবশালী চক্রের নিকট থেকে উদ্ধার করেই যাচ্ছি যা বিগত দিনে আপনারা দেখেছেন এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।