জাতিসংঘের প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট : রাশিয়া

    0
    251

    আমারসিলেট 24ডটকম , সেপ্টেম্বর  : মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের পরিদর্শক দলের তদন্ত প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া। হামলার জন্য বিদ্রোহীদের দায়ী করে নতুন তথ্যপ্রমাণ বুধবার মস্কোর কাছে হস্তান্তর করেছে দামেস্ক।
    জাতিসংঘের প্রতিবেদন গত সোমবার প্রকাশ করা হয় বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।  জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলায় সারিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে বলা হলেও কারা এ জন্য দায়ী তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ওই হামলার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীই দায়ী। এর জবাবে রাশিয়া আজ জাতিসংঘের প্রতিবেদন সম্পর্কে এসব মন্তব্য করে।

    রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকোভ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ  কে বলেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার বিষয়ে জাতিসংঘ সচিবালয় ও পরিদর্শকেরা যে অবস্থান নিয়েছে তাতে আমরা হতাশ। তারা অসম্পূর্ণ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। রিয়াবকোভ বলেন, সিরিয়ায় কী ঘটেছে তার পূর্ণাঙ্গ চিত্র ছাড়া জাতিসংঘের তদন্তদলের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছা অসম্ভব। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, পূর্বপরিকল্পিত ও পক্ষপাতদূষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়। রিয়াবকোভ জানান, ওই রাসায়নিক অস্ত্র সিরিয়ার বিদ্রোহীরা ব্যবহার করেছে বলে নতুন কিছু তথ্যপ্রমাণ মস্কোকে দিয়েছে দামেস্ক।

    সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল মুয়াল্লেমের সঙ্গে বৈঠকের পর রিয়াবকোভ এমন কথা বলেন। এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত মঙ্গলবার বলেন, জাতিসংঘের পরিদর্শকেরা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রগুলো থেকে কোনো তথ্য না নিয়ে, যাচাই বাছাই না করেই তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাই এই প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ এবং মন গড়া।

    ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লঁরা ফ্যাবিয়াসের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে কোনোভাবে এটা প্রমাণ হয় না যে ওই রাসায়নিক হামলার জন্য বাশার বাহিনী দায়ী।

    বাশারকে দায়ী করলেন ওবামা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহূত হয়েছে এ ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ নেই। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে দ্ব্যর্থহীনভাবে সে কথাই উঠে এসেছে। তিনি বলেন, প্রতিবেদনের বিস্তারিত বিষয় ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে সরকার ছাড়া আর কারও পক্ষে এই হামলা চালানো একেবারেই অসম্ভব।

    ওবামা গতকাল স্প্যানিশ ভাষার সম্প্রচার নেটওয়ার্ক টেলেমুন্ডুর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিরিয়ার বিষয়ে বিশ্ব জনমতের পরিবর্তন হয়েছে।

    এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গতকাল ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, জেনেভায় মার্কিন-রুশ মতৈক্যে যে রূপরেখা হয়েছে, তা জাতিসংঘে কঠোর প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। রূপরেখা বাস্তবায়নে সিরিয়াকে বাধ্য করতে চাপ অব্যাহত রাখা হবে।

    প্রস্তাবের খসড়া তৈরি হচ্ছে: রুশ-মার্কিন মতৈক্যের রূপরেখা অনুযায়ী জাতিসংঘ প্রস্তাবের খসড়া তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ লক্ষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন নিউইয়র্কে আলোচনা শুরু করেছে।

    ওই খসড়ায় সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ১৫ সদস্যর হেফাজতে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।