জনসমর্থন না থাকায় বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    238

    আমারসিলেট24ডটকম,০৮ফেব্রুয়ারীঃ আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩১তম বিসিএস পুলিশ সার্ভিসের সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় জনসমর্থন না থাকায় বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    সকাল প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক জামায়াত-শিবির ও তাদের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করতে সহিংসতা চালিয়েছে। পেট্রল বোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। জনমনে আতঙ্ক তৈরি করতে যানবাহন-রেললাইন ধ্বংস করেছে। কিন্তু জনসমর্থন না থাকায় তাদের সব আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। এসময় শিক্ষানবিশ পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনীকে সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। কিন্তু দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নিশ্চিত করতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখতে জনগণ আবারো আওয়ামী লীগের উপর আস্থা রেখেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করতে বিএনপি ও তাদের দেশি-বিদেশি প্রভু-লবিস্ট, সুবিধাভোগী গোষ্ঠী এবং পেশাদার বুদ্ধিজীবীদের নানমুখী চেষ্ঠা ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্র ও সংবিধান সমুন্নত রাখতে জনগণ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা এখন উন্নয়নের পরবর্তী ধাপ শুরু করেছি। নির্বাচনী ইশতেহারে এ উন্নয়ন পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেছি। এক বছরে এনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে ১৫ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন এবং প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের ( নিহত পুলিশ সদস্য) আত্মত্যাগ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
    বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা দমনে পুলিশসহ যৌথ বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ভূমিকা পালন করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমায়াত-শিবির সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে আক্রমণ করেছে। এ জঙ্গি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। পাঁচ বছরে পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাঁচ বছরে আমরা ছয়শ ১৪ টি ক্যাডার পদসহ প্রায় ৩১ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করেছি। ইন্ডস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশসহ নৌ-পুলিশ গঠন করা হয়েছে। অপরাধ দমনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন গঠন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তায় সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে।

    এসআই (উপ-পরিদর্শক) ও সার্জেন্টদের পদমর্যাদা তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদমর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত আইজিপি (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ) র‌্যাংক ব্যাচ পনঃপ্রবর্তন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইজিপির পদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় এবং পুলিশ বিভাগের ২টি গ্রেড-২ পদকে গ্রেড-১ উন্নীত করা হয়েছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বরাদ্ধকৃত অর্থকে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করে। আমরা নিরাপত্তা ও অপরাধের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে আধুনিকায়ন করেছি। এসময় তিনি পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করতে পুলিশের জনবল ও সরঞ্জাম বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন ইউনিট সৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন। সরকার দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্য পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি জনগণের প্রতি সুশীল আচরণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষানবিশ পুলিশ সুপারদের মার্চপাস্ট ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ৩জন শিক্ষানবিশ পুলিশ সুপারকে পুরস্কার প্রদান করেন।

    বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল নাঈম আহমেদের সভাপতিত্বে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল, পুলিশের আইজি খন্দকার হাসান মাহমুদসহ মন্ত্রীসভা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।