জঙ্গিবাদি গোষ্ঠীর হামলায় বিপন্ন হবে মানবতা:দেশের বিশিষ্টজন

    0
    236

    আমারসিলেট24ডটকম,১৬জানুয়ারী,রাজন : সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও উগ্র মৌলবাদি গোষ্ঠীকে প্রতিহত না করলে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বাংলাদেশ সহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া। দিন দিন অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা বাড়বে। জঙ্গিবাদি গোষ্ঠীর হামলায় বিপন্ন হবে মানবতা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত ঘোষণা করে মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাট্টা হতে হবে। মানবতার শত্রু মৌলবাদী অপশক্তিকে সমূলে নির্মূল করতে সম্মিলিতভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা।

    বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংবাদিক মঞ্চ আয়োজিক প্রতিকী অবস্থান কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে তারা এসব মতামত তুলে ধরেন। ‘সাম্প্রদাযিক হামলা-রুখে দাও বাংলা’ এই শ্লোগানে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, শিক্ষাবীদ, বুদ্ধিজীবী, শিশু সংগঠক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।

    কর্মসূচীতে সংহতি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা আইন করতে হবে। ভারতের মতো মাইনোরিটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের যাবজ্জীবন দন্ড নিশ্চিত করতে হবে। নিষিদ্ধ করতে হবে জামায়াত শিবির। হামলার সঙ্গে যুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচারের দাবি ওঠে অবস্থান কর্মসূচী থেকে। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক হামলা ও মৌলবাদী অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনতে হবে জবাবদিহিতার আওতায়। যেসব দেশ মৌলবাদী গোষ্ঠীর অর্থ যোগান দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান বক্তারা।

    যশোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল সহ বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের ওপর হামলাকারী অপশক্তি কখনোই দেশপ্রেমিক হতে পারে না। তারা দেশদ্রোহী। পাকিস্তানের দোসর। তাদের মধ্যে তথাকথিত প্রগতিশীল শক্তিও রয়েছে। রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধের বিুরদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা। তাই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে মামলা দেয়ার দাবি জানান অনেকেই। পাশাপাশি হামলা প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনের  ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানান কেউ কেউ। তারা বলেন, দেশের ৪০ ভাগ পুলিশ জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তারা জামায়াত-শিবির সহ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে আপোস করছে। ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা ও গ্রেফতার না করা সহ হামলার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। মাইনোরিটিদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি ওঠে প্রতিবাদ কর্মসূচী থেকে।

    ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশবিরোধী শক্তিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়ে বলা হয়, অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গিকারের প্রয়োজন জরুরী বলেও মনে করেন বক্তারা। সেই সঙ্গে দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে রুধে দাঁড়াতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

    পিটিবি নিউজ ২৪. কম-এর সম্পাদক আশীষ কুমার দে সভাপতিত্বে ও জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রাজন ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম, অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব আলতাব মাহমুদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ সিকদার, সাংসদ এ্যাডভোকেট মীর শওকত আলী বাদশা,   স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা শফি আহমেদ, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া, সাংবাদিক রাজু আহমেদ, শিশু সংগঠক ডা. লেলিন চৌধুরী, রফিকউদ্দিন পনির, আবুল কালাম আজাদ, তুসার রেহমান, আমিনুর রসুল বাবুল, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জিলানী শুভ, যুব নেতা সেকান্দার হায়াত প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক হাসানুজ্জামান তরুণ, পরিতোষ কুমার রায় তুষার, বিভাষ বাড়ৈ, মোরসালিন মিজান, অপূর্ব কুমার, উন্মুল উয়ারা সুইটি, তৌহিদুর রহমান, মাহাবুব হাসান, দিপক দেব, রশিদ মামুন প্রমুখ।