ছাতকে ১২শ’ নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক

    0
    234

    “এক যুগেও হয়নি নতুন জরিপ:

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫মে,চান মিয়াঃ ছাতক উপজেলায় প্রায় ৪৪হাজার নলকূপ রয়েছে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ব্যক্তি মালিকানায় প্রায় ৪০হাজার এবং সরকারী ভাবে স্থাপিত ৩হাজার ৫শ ৭৫টি নলকূপ। আর্সেনিকযুক্ত প্রায় ১০হাজার নলকূপের মধ্যে  ১২শ নলকূপে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। সর্বশেষ ২০০৩ সালের জরিপ কার্য থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু পৌর এলাকার মধ্যেই রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকযুক্ত প্রায় ৪শ  নলকূপ।

    এছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে নোয়ারাই ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আর্সেনিকযুক্ত নলকূপ রয়েছে । ২শতাধিক নলকূপে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক এ ইউনিয়নের। ২০০৩সালে সরকারি জরিপকার্য শেষে আর কোন আর্সেনিকের জড়িপ কাজ হযনি। এ জরিপে  ছাতক পৌরসভাসহ উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নের প্রায় ১২শ অগভীর নলকুপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ধরা পড়েছিল। সরকারীভাবে স্থাপিত ৩হাজার ৫শ ৭৫টিসহ উপজেলায় প্রায় ৪০হাজার মালিকানা নলকুেপর মধ্যে আর্সেনিকের মাত্রা রয়েছে প্রায় ১০হাজারেরও অধিক। আর্সেনিকযুক্ত পানি পান ও ব্যবহার করে স্থানীয় লোকজন আর্সেনিকোসিস রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

    উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, পৌর শহরে ১৬৭৫টি নলকূপের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে ৩৪২টিতে। ছাতক সদর ইউনিয়নের ২৭৮টি নলকূপের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে ১৪টি নলকূপে। নোয়ারাই ইউনিয়নের ১০৩৬টি  নলকূপের মধ্যে ২১৭টিতে,কালারুকা ইউনিয়নে ৬৮২টি নলকূপের মধ্যে ৫৯টিতে, গোবিন্দগঞ্জ-সৈয়দের গাঁও ইউনিয়নে ৭৩৬টি নলকূপের মধ্যে ৩৬টিতে, ছৈলা আফজালালাবাদ ইউনিয়নে ৭৭২টি নলকূপের মধ্যে ৬১টিতে, দোলারবাজার ইউনিয়নে ৭১৪টি নলকূপের মধ্যে ২০টিতে, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে ৪৯৭টি নলকূপের মধ্যে ৩৮টিতে, উত্তর খুরমা ইউনিয়নে ৩৯৭টি নলকূপের মধ্যে ৩৭টিতে, জাউয়া বাজার ইউনিয়নে ৫৬৪টি নলকূপের মধ্যে ৪২টিতে, ভাতগাঁও ইউনিয়নে ৯৪৫টি নলকূপের মধ্যে ৫৩টিতে, চরমহল্লা ইউনিয়নে ৪৪৩টি নলকূপের মধ্যে ৩৭টিতে ও ইসলামপুর ইউনিয়নের ৮৭০টি নলকূপের মধ্যে ১৮০টিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে।

    এদিকে উপজেলার ১৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ-সৈয়দের গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাদে-ঝিগলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মায়ের কুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জলসি-চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাগামুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতারপই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন বড়কাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজার গাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রংপুর-চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গনেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দারগাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পৌর শহরের মন্ডলীভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুমনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানী বিদ্যালয়সহ প্রায় ৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকুপের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে বলে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্র জানিয়েছে। সরকারিভাবে আর্সেনিকের উপস্থিতি যাচাইযের মাধ্যেমে উপজেলায় ১০হাজার ২শ ৬৭টি নলকূপে আর্সেনিক চিহ্নিত করা হয়।

    এর মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে ১হাজার ১শ ৮৮টি নলকূপে। অকেজো ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় ৬শ ৩৯টি নলকূপ। এছাড়া পৌর এলাকায় ডিপ ডিউবওয়েল রয়েছে প্রায় ৩হাজার।

    এর মধ্যে জনশ্স্থ্যবা অধিদপ্তরের ৩৩৬টি নলকুপের মধ্যে ৩০২টি চালু, ৩৪টি অকোজো ও ১৫০টিতে রয়েছে আর্সেনিক। সীমান্তবর্তী পাহাড়ী এলাকা ইসলামপুর ইউনিয়নে তারা নলকুপ, রিংওয়েলসহ অগভীর নলকূপ রয়েছে অরো ১৯৫টি। কিন্তু এসব নলকূপে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সরকারিভাবে কোন পরীক্ষা না নেয়ায় ৩শ’থেকে ৫শ’ পিপিবির চাইতেও বেশি আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে আর্সের্নিকোসিস রোগসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত্র হচ্ছেন এলাকার লোকজন।

    উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ সরকার জানান, স্বাভাবিক ভাবে ৫০পিপিবি মাত্রার মধ্যে পানি পান করা যায়। তবে এর উর্ধ্বে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে আর্সেনিকোসিস রোগসহ জীবন-মৃত্যুর ঝূঁকি থাকে। এ ছাড়া ২০০৩সালে পরিচালিত জরিপে মান্ধাতা আমলের রাসায়নিক ও যন্ত্রপাতির মাধ্যেমে আর্সেনিকের পরীক্ষা যথোপযুক্ত হয়নি বলেও তিনি মনে করেন।