আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৯মে,চান মিয়াঃ ছাতকে দু সপ্তাহের ব্যবধানে এক ব্যবসায়ীসহ ৩প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। পৃথক ৪টি ডাকাতির ঘটনায় প্রায় ৪৬ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কারসহ ৪০লক্ষটাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। আহত হয়েছে দম্পতিসহ ৫জন। গ্রেফতার হয়েছে মাত্র ৩জন। জানা যায়, ২৬ মে গভীর রাতে উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী ও গ্রামের জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লি আবদুল কাদিরের বাড়িতে এক দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। গ্রীল ও দরজা ভেঙ্গে ১০-১২জনের সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাতদল ঘরে প্রবেশ করে। পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে এবং প্রত্যেককে হাত-পা বেঁধে লুটতরাজ চালায়।
প্রায় ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি শেষে নগদ ৫লক্ষ টাকা, ৮ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ২৭মে সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ১৮মে গভীর রাতে উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মর্যাদ গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত ছোরাব আলীর ছেলে তারাজুল ইসলামের বাড়িতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১২/১৪জনের মুখোশধারী সংঘবদ্ধ ডাকাতরা গ্রিলের তালা ও দরজা ভেঙ্গ ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে প্রত্যেক সদস্যদের হাত-পা বেঁেধ নগদ ১৫হাজার টাকা, ২১ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, ২টি মোবাইল সেটসহ প্রায় ১৫লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে ডাকাতরা গুলী ছুড়ে মালামাল নিয়ে মর্যাদ গ্রামের দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ওই দিন ভোর সকালে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এদিকে ১৩ মে ছাতক সদর ইউনিয়নের কাজীহাতা গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র সৌদি আরব প্রবাসী লায়েক মিয়ার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ঘটেছিল।
৮-১০জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল প্রবাসীর বসত ঘরের সামনের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে নগদ ৫০হাজার টাকা, ১২ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতদের অস্ত্রের আঘাতে প্রবাসী লায়েক মিয়া (৩২), স্ত্রী রুনা বেগম (২২) ও ছোট বোন খালেদা (২১) আহত হয়। গুরুতর আহত সৌদি আরব প্রবাসী লায়েক মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং স্ত্রী ও বোনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় পরের দিন সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজীহাতা (নোয়াগাঁও) গ্রামে অভিযান চালিয়ে মৃত আক্রম আলীর পুত্র সাদক আলী (৩৫), নুরুল হকের পুত্র হুসেন মিয়া (৩২) ও মৃত রইছ আলীর পুত্র তৈয়বুর রহমান ওরফে গেদা (২৫) কে আটক করা হয়। ২৪ মে রাতে ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের মৃত আইনুদ্দীর পুত্র ব্যবসায়ী শাহনুর উদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বসত ঘরের গ্রিল ও সদর দরজা ভেঙ্গে ১০-১২জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মূখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে লুটতরাজ চালায়।
এসময় নগদ টাকা, ৫ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইলসেটসহ ৫লক্ষাধিক টাকা মুল্যের মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতদের হামলায় শাহনুর উদ্দিনের ছোট ভাই সালা উদ্দিন (২৪) গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরের দিন সকালে ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘন ঘন ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন প্রবাসী পরিবার।
বরাবরের মতো এখানে প্রবাসীদের প্রতি টার্গেট রয়েছে ডাকাতদের। ফলে দিন দিন আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটছে। উপজেলায় ডাকাত আতঙ্কে পালাবদল করে পাহারা চলছে বলে জানা গেছে।
