ছাতকে অপহরণও হত্যার ঘটনা বৃদ্ধিতে সর্বত্র আতঙ্ক

    0
    212

    চান মিয়া: ছাতকে অপহরণ ও হত্যার মতো জঘন্যতম অপরাধ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চুরি ডাকাতি, ছিনতাইকে হার মানিয়ে অপরাধিরা সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ীরা অপহরণ ও হত্যার ভয়ে ব্যবসা কাজে মন বসাতে পারছেন না। স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা রিতিমতো প্রতিষ্ঠানে যেতে হিমশিম খাচ্ছে অপহরন, মুক্তিপণ ও হত্যার ভয়ে।

    শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকরা তাদের পথ চেয়ে থাকতে হচ্ছে। কোন সময় সন-ানরা অপরাধিদের ছোবলে পড়বে এ আতঙ্ক অভিভাবকদের মাঝে সর্বদা বিরাজ করছে। জানা যায়, ২২মার্চ উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি শাহ জালাল জামে মসজিদের ইমাম জামায়াত নেতা সুয়াইবুর রহমান সুজন র্কর্তৃক একই গ্রামের প্রবাসী জহুর আলীর শিশুপুত্র ইমন (৬) কে অপহরন করে মুক্তিপন দাবি করে। তাদের দাবিকৃত ২লক্ষ টাকা না পেয়ে এ নিষ্পাপ শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখে ইমামসহ আরো দু’জন ঘাতক। ঘটনার পর মুল ঘাতক মসজিদের ইমামও উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের ব্রাক্ষণঝুলিয়া গ্রামের বাসিন্ধা সুজন পালিয়ে যাওয়ার সময় সিলেটস’ কদমতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে।

    পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে অপহরণ করে শিশু ইমনকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়।

    ঘটনার ২২দিন পর বাতিরকান্দি গ্রাম সংলগ্ন হাওরের গর্ত থেকে শিশু ইমনের কঙ্কাল উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মোট ৫জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়। এর আতঙ্ক কাটতে না কাটতে ঘটে গেলে আরো একটি হত্যার ঘটনা। ২৫এপ্রিল উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের বড়কাপন টুকেরগাঁও গ্রামের তৈয়ব আলীর পুত্র জাউয়াবাজারের পান ব্যবসায়ী আকিক মিয়া (৩০)র গলিত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

    সকালে দক্ষিণ বড়কাপন জামে মসজিদ মক্তবের শিশুরা পড়তে গেলে রাস-ার পার্শ্ববর্তী একটি ডোবায় লাশ দেখে স’ানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস’ল থেকে আকিকের গলিত লাশ উদ্ধার করে। জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় ২১এপ্রিল সকালে জাউয়া বাজারে ব্যবসায়ী কাজে বের হলে বাড়িতে ফেরেননি। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এতে ২৪এপ্রিল জাউয়া গ্রামের কবির আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।

    এর আগে ১৮ এপ্রিল গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সুহিতপুর গ্রামের মৃত ইছুব আলীর স্ত্রী চন্দ্রমালা (৫৫) নামের এক মহিলা নিখোঁজ হয়। ৭দিন পর তাকে গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা থেকে উদ্ধার করে স’ানীয়রা। গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকার শ্রমিক নেতা ইকবাল হোসেন জানান, এসব সংবাদ শুনে তিনি আতঙ্কিত। আগের মতো তিনি এখন একা চলাফেরা থেকে বিরত রয়েছেন।

    এদিকে রহমতুন নেছা শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ী মাসুদ আহমদ নানু জানান, ছাতকে অপহরণ ও হত্যার মতো ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি আতঙ্কে আছেন। ব্যবসায়ী আমির আলী বলেন, সকালে দোকানে একা আসলেও রাতে দু’জনকে সাথে নিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন।

    এসব ঘটনায় ছাতক উজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান-মূলক শাসি-র দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।