চেয়ারম্যান কর্তৃক ছেলের সামনে মাকে ধর্ষণঃবিক্ষোভে নিহত-৩

    0
    409

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৯সেপ্টেম্বর:  টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ছেলের সামনে মাকে ধর্ষণের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপে তিনজন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কালিয়া গ্রামের শামিম মিয়া ও শ্যামল (৩০)। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের গুলিতে কেউ নিহত হয়নি। এছাড়া, পুলিশের দাবি, ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। কিন্তু ধর্ষণ করা হয়নি।

    এলাকাবাসী জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে কালিহাতী পৌর এলাকার সাতুটিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রোমা তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে ঘাটাইলের আঠারদানা গ্রামের শ্রমজীবী আলামিন (১৭) ও তার মাকে কৌশলে বাড়িতে ডেকে আনে। এক পর্যায়ে বাড়ির উঠানে আলামিনকে বিবস্ত্র করেন রোমা ও তার ভগ্নিপতি হাফিজ। এ সময় আলামিনের মাকেও বিবস্ত্র করা হয়। মারধরের পাশাপাশি আলামিনের মাকে ঘরে নিয়ে রোমা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

    এ ঘটনার খবর থানায় দেয়ার পর পুলিশ এসে ওই ঘর থেকে আলামিন ও তার মাকে উদ্ধার করে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আলামিনের মা বিষ পান করেন। এরপর দ্রুত মা এবং ছেলে দু’জনকেই চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় এলাকাবাসী।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে প্রতিবাদকারীরা ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভকারীরা থানার দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পথে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। জনতা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময়ই পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকটি গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়। ঘটনার পরপরই নিহত হয়েছেন শামীম (৩৫) ও ফারুক (২৮)। এরপরে মারাত্মক আহত অবস্থায় শ্যামল দাস (১৫) নামে আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সাভারে তার মৃত্যু হয়।

    এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, কয়েকটি গ্রাম থেকে দু-তিন হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ করতে করতে থানার দিকে আসতে থাকলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। এ সময় পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও দুজন কনস্টেবল মারাত্মকভাবে আহত হন। বাধ্য হয়ে পুলিশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। কিন্তু পুলিশের গুলিতে কেউ নিহত হয়নি।’ ওসি আরো বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও দ্বিধাবিভক্তি ছিল। তাদেরই আঘাতে কেউ মারা গিয়ে থাকতে পারে। ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

    তিনি জানান, মা-ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় মূল হোতা হাফিজ উদ্দিন ও রোমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরও থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি।ইরনা