চুনারুঘাটে লুকোচুরি করে বাল্য বিবাহ:ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

    0
    228

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১অক্টোবর,ফারুক মিয়া: লুকোচুরি করে বয়স ফাঁকি দিয়ে রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাল্য বিবাহটি বন্ধ করতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হলেও বন্ধ হয়নি বাল্য বিবাহ। তাড়াহুড়ো করে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে কন্যাকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হয়।

    জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গণকিরপাড় গ্রামের কাজল মিয়ার নাবালিকা কন্যা রেফা আক্তার তার স্কুল সনদপত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ হচ্ছে ২৫/০৩/২০০১ ইং যার বর্তমান বয়স মাত্র ১৪ বছর ০৬ মাস ০৭ দিন। গত বুধবার বিবাহের আয়োজন দেখে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গ বিবাহটি বন্ধ করার জন্য ১নং গাজীপুর ইউ/পি চেয়ারম্যান মাওঃ তাজুল ইসলামকে অবগত করা হয়। বয়স হয়নি অথচ কিভাবে মেয়েটির বয়স দেখানো হল তা জানতে চাইলে, উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, অবস্থার প্রেক্ষিতে এবং অভিভাবকের আকুতি মিনতিতে এ ধরনের ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্য হয়েই আমাদেরকে দিতে হয়। সামাজিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে মাঝে মাঝে আইনকে উপেক্ষা করতে হয়। তারপর তার নিষ্ক্রিয়তায় বিবাহকর্ম যথারীতি চলছে দেখে স্থানীয় এলাকাবাসীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেন এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন।

    এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে বয়স বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার স্কুল সনদপত্র অনুযায়ী তার বয়স ১৪ বছর। এছাড়াও, উক্ত বাল্য বিবাহটি রোধে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার করার কিছু নাই ওই ছাত্রীটির বয়স জানি ১৪ বছর। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের কাছ থেকে শুনতে পারলাম মেয়েটির জন্ম নিবন্ধনে বয়স হচ্ছে ২০ বছর’। পাড়া প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, প্রকৃতই মেয়েটি শিশু ও নাবালক। কন্যার পিতা লোভের বশবর্তী হয়ে অল্প বয়স্ক কন্যাকে বিয়ে দেয়ার আয়োজন করেন।

    বাল্য বিবাহ রোধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গণকিরপাড় গ্রামের মৃত হাজী মোঃ সুরত আলীর পুত্র ও চন্দ্র মল্লিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ উসমান গণি (কাজল) বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। মতামত জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশহুদুল কবীর বলেন, আমরা শীঘ্রই বাল্য বিবাহ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব এবং ওই নাবালিকার অভিভাবক সহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসীরা।