চরমপন্থার ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

    0
    238

    আমারসিলেট24ডটকম,১৮অক্টোবরঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল প্রকার সন্ত্রাস, সহিংসতা ও চরমপন্থার ব্যাপারে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, এ ধরনের সমস্যা বিশ্ব শান্তি ও প্রবৃদ্ধির পথে প্রধান অন্তরায়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, তার সরকার সকল প্রকার সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা করে আসছে। আজ ইতালির মিলানো কংগ্রেসীতে ১০ম আসেম শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী দিনে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যকার সংলাপ ও সহযোগিতাভিত্তিক এবং আসেম’র ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ শীর্ষক ‘রিট্রিট সেশনে’ ভাষণকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোর পক্ষ থেকে উন্নত দেশগুলোর প্রতি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও প্রচেষ্টা জোরদারে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছিলেন।
    শেখ হাসিনা তার ভাষণে গতবছর বাংলাদেশের অগ্রগতি ও ধর্মনিরপেক্ষ নীতি ধ্বংস করতে সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী গ্রুপগুলোর বর্বর কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তিনি কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কোনো ব্যক্তি বা গ্রুপকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে না দেয়ায় তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তিনি সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি কৌশল প্রণয়ন করতে জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানান।
    সম্প্রতি গাজায় ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী নৃশংসতার উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আবারও এ গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ধরনের হত্যাকা- কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। শেখ হাসিনা কম কার্বন নির্গমন ও জলবায়ু সহনশীলতা উন্নয়নের প্রতি তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোর পক্ষ থেকে ব্যাপক হারে কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোর প্রতি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অঙ্গীকার পূরণের আহবান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ কখনো উন্নয়নশীল বিশ্বে গড় মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের মাত্রা অতিক্রম করবে না।
    শেখ হাসিনা অঙ্গীকার পূরণে উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতি ও উদ্যোগের মধ্যে বিশাল ব্যবধানে ঢাকার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রিও+২০ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ সকলের জন্য আমরা ভবিষ্যৎ চাই’-এর স্বপ্ন পূরণের অংশীদার হতে সম্মত হয়েছিলো। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও দেশের উন্নয়ন বাজেট থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বরাদ্দ দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও সম্পদ এখনো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অব্যাহত ক্ষতির সম্মুখীন।
    শেখ হাসিনা বলেন, বার বার প্রবল বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও লবণাক্ততা আমাদের উপকূলীয় জনজীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর সবই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের ফসল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনের ব্যয় এখনকার চেয়ে অনেক বেশী বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য ‘অভিযোজন’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, অভিযোজন থেকে বাংলাদেশ অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ জলবায়ু সহনীয় করতে অন্যদের সঙ্গে এ অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত রয়েছে।
    বালাদেশের নেত্রী বলেন, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোর অভিযোজন, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও স্থানান্তর, সক্ষমতা অর্জন, কর্মপরিকল্পনার স্বচ্ছতা ও সমর্থনে ব্যাপক করে ও দ্রুত অর্থায়ন করা জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তার সরকার বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি তাঁর সরকার ৩২ লাখ ‘সোলার হোম সিস্টেম’ স্থাপন করেছে এবং দেশব্যাপী ১৫ লাখেরও বেশি রান্নার উন্নতমানের চুলা প্রদান করেছে। পাশাপাশি লবণাক্ততা সহনীয় বিভিন্ন ধরনের শস্য উদ্ভাবন করেছে।