চট্টগ্রাম-১২ ও ১৩ আসনের প্রার্থি আল্লামা এম এ মতিন

    0
    295

    আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ও চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বরেণ্য রাজনীতিবিদ, সম্মিলিত জাতীয় জোটের শীর্ষনেতা ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব আল্লামা এম এ মতিন এর পক্ষে মনোনয়নপত্র নেয়া হয়েছে। আজ ১৮ নভেম্বর রবিবার বিকাল ২টায় পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার সৈয়দ আবু ছাইদের নিকট থেকে এম এ মতিনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন ও পটিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পীরজাদা এয়ার মুহাম্মদ পেয়ারু সহ নেতৃবৃন্দ। গত ১১ নভেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-১৩ আসনের জন্য এম এ মতিনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন দক্ষিণ জেলা ইসলামী ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার আবুল হোসেন।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টনেতা কাযী মুহাম্মদ ইলিয়াছ, জসীম উদ্দীন সিদ্দীকী, কাযী আবু বকর, কেন্দ্রীয় যুবনেতা জসীম উদ্দীন, ছাত্রনেতা নিজামুল করিম সুজন, এনামুল হক, কামাল উদ্দিন, জোবাইরুল হক, রফিক ওসমানী, সরোয়ার প্রমুখ। জননেতা আল্লামা এম এ মতিন, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রীপ্রাপ্ত মেধাবী সংগঠক, রাজনীতিবিদ। তিনি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তরে হাদীছ শাস্ত্রের উপর কামিল ডিগ্রী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) সহ সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তর অতিক্রম করেছেন সাফল্যের সাথে। ছাত্রজীবন থেকে তিনি ছিলেন বয়সের তুলনায় একজন প্রাগ্রসর ব্যক্তিত্ব। অন্য দশজন ছাত্রের চাইতে দেশ নিয়ে, সমাজ নিয়ে তার চিন্তাভাবনা ছিল ভিন্নতর।

    স্বাধীনতা উত্তর সময়ে দেশের ছাত্রসমাজকে যখন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ইসলামের বুলি আওডিয়ে বিভ্রান্ত করার চক্রান্তে নেমেছিল তখন তিনি ১১ জন মেধাবী ছাত্র নিয়ে গড়ে তুললেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা। ১৯৮০ সালে তার হাতে গড়া এ সংগঠন আজ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৬৪ জেলায় দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। যুবসমাজকে নৈতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে উদ্ধার করতে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা। আর্তপীড়িত, অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সরকারি রেজিষ্টার্ড সামাজিক সংগঠন আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন। এ সেবামূলক সংগঠনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১৩৯টি কন্যাদায়গ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, ৫৮২ জন অসহায় ছাত্রকে অর্থ সহায়তা প্রদান সহ ট্রাস্টের মাধ্যমে বর্তমানে চট্টগ্রাম-নোয়াখালীতে পরিচালিত হচ্ছে ৩টি মাদ্রাসা, ২টি মসজিদ, এতিমখানা ও হেফজখানা কমপ্লেক্স। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সুন্নী জনতার একক রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। দেশের শোষিত, বি ত, অধিকার হারা জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের লক্ষে তার প্রতিষ্ঠিত জাতীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে শান্তিপ্রিয় জনতার দলে পরিণত হয়েছে।

    মজলুম মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষেই দেশপ্রেমিক জননেতা এম এ মতিনের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রা। এ লক্ষে তিনি ২০০১ সালে কোতোয়ালি ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আনোয়ারা আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক সিটি গভর্মেন্ট প্রতিষ্ঠার স্লোগান তুলে তিনি ২০১৪ সালে চসিক মেয়র নির্বাচনে অংশ নিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ২০১৩ সালে দেশে জঙ্গিবাদী অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠলে সুফিবাদী শান্তিকামী জনতাকে সাথে নিয়ে তিনি প্রতিরোধের ডাক দেন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে ২০১৩ সালের ২০ এপ্রিল লালদীঘি ময়দানে দশ লক্ষাধিক জনতা অংশ নেয়। তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত সমন্বয় কমিটির ব্যানারে অনুষ্ঠিত হওয়া এ মহাসমাবেশে অংশ নেন হাজারো পীর- মাশায়েখ ওলামায়ে কিরাম। তিনি পরিচিতি পান সুন্নী ঐক্যের মহানায়ক অভিধায়। মুসলিম জাতির ক্রান্তিলগ্নেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন এ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব।

    ছিন্নভিন্ন শরীর নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বাত্মক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জননেতা এম এ মতিন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩০ ট্রাক খাদ্য ও বস্ত্র সামগ্রী বিতরণ করে নির্যাতিত অসহায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ান এ মানবদরদী জননেতা। রাসুলে কারীম (দ) এর রওজা শরীফ নিয়ে সৌদি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ, ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য তার নির্দেশে ঢাকা চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কর্মসূচিও পালন করে সর্বস্তরের জনগণ। তিনি শুধু দেশে নন, কর্মগুণে প্রবাসেও সমান সমাদৃত। গত বছর ওমান, আরব আমিরাত ও সৌদি আরব সফরে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ব্যাপক সংবর্ধিত হন।

    সুফিবাদী জনতার প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে টকশো আলোচনাতেও তিনি নিয়মিত অংশ নেন। ইসলামী রাজনীতি, সমাজচিন্তা, সংগঠন ভাবনাসহ নানা ইস্যূতে তার প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে দীর্ঘসময় সেবামূলক বহুমূখী কাজ করার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এ জননেতা । একাধারে সংগঠক, লেখক-গবেষক আলেমেদ্বীন, সমাজসেবক, বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, সম্মিলিত জাতীয় জোটের শীর্ষনেতা ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব জননেতা এম এ মতিন চট্টগ্রাম-১২ ও চট্টগ্রাম-১৩ আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ায় এ দু’আসনে ভোটের হিসাব পাল্টে যাবে।