চট্টগ্রামে এক সুন্নি আলেমকে খুন করলো জামাত কর্মী

    0
    217

    “জামাত হেফাজত বিরোধি হওযার কারনেই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এক সমর্থককে হত্যা করেছে জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মী”

    আমারসিলেট24ডটকম,২৯মার্চঃ রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকালে উপজেলার রোয়াজারহাট বাজার এলাকায় আবু সৈয়দের ওপর হামলা চালায় একই গ্রামের হাবিবুর রহমান (৫৫)।সূত্রটি  বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে একটি ছুরি দিয়ে আবু সৈয়দের গলার ডানপাশে আঘাত করে  খুনি হাবিবুর। গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।রাঙ্গুনিয়ায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী মাওলানা আবু ছৈয়দ (৫৮) ।সে উপজেলার শিলক ইউনিয়নের রাজাপাড়া গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। জামাত ইসলামীর সমর্থক ও একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত আহমদুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান (৫৫) গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় উপজেলা সদরের রোয়াজারহাট বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করেন। সুন্নি পন্থী মাওলানা আবু ছৈয়দ শিলক এম শাহ আলম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ধর্মীয় শিক্ষক ও বর্তমানে স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম ও আল মাবরুর হজ কাফেলা সাথে  জড়িত ছিলেন। গতকাল বিকেলে আছরের নামায শেষে রাঙ্গুনিয়া সদরের রোয়াজারহাট বাজারের পূর্ব পাশে যাবার পথে বিরতিহীন বাস কাউন্টারের সামনে ঘাতক হাবিবুর রহমান অতর্কিত এসে গলায় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন তাকে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে মাওলানা আবু ছৈয়দকে উপজেলা স্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

    অপরদিকে, খুনি হাবিবুর রহমানকে বাজারের লোকজন ধাওয়া করে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। ঘাতককে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বর্তমানে তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হাবিবুর রহমান কয়েক মাস আগেও গ্রামের আহমদ করিম নামের একজনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্ঠা চালান বলে পুলিশ জানিয়েছেন। পূর্ব শত্রম্নতা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও ইসলামী ফ্রন্ট সমর্থিত সদ্য নির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেনের পক্ষে মাওলানা আবু ছৈয়দ জোরালো ভাবে কাজ করায় ক্ষোভের বশবতি হয়ে জামায়াত ইসলামী সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম তালুকদারের পক্ষ কাজ করা খুনি হাবিবুর রহমান এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটান বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন। নিহতের স্ত্রীর ছোট ভাই আবু তাহের বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সাত-আট মাস আগে শিলক ইউনিয়নের জামাত কর্মী হাবিবুর রহমান রাজাপাড়া গ্রামের প্রবাসী মোঃ আহমদ করিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালান। এই ঘটনার পর হাবিবুর রহমানকে স্থানীয়ভাবে শাসিয়ে দেন মাওলানা আবু ছৈয়দ। এরপর থেকে সে আবু ছৈয়দের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাচনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেনের পক্ষ এলাকায় কাজ করেন মাওলানা আবু ছৈয়দ। অপরদিকে জামাত ইসলামী সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাশেদুল ইসলামের পক্ষ কাজ করেন হাবিবুর রহমান। দুজনেই রাজাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং একই কেন্দ্রের ভোটার। প্রায় সাতাশ হাজারেরও বেশী ভোটে আহলে সুন্নাতের প্রার্থীর কাছে হেরে যান জামাতের প্রার্থী। এরপর থেকে ক্ষোভ আরো পুঞ্জিভুত হয়ে গতকাল উপজেলা সদরের রোয়াজারহাট বাজারে একা পেয়ে গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন  মাওলানা আবু ছৈয়দকে। নিহতের ছেলে মোঃ নঈমুদ্দীন জানান, নির্বাচনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় জামায়াত কর্মীরা তার বাবাকে হত্যা করতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। ঘটনার পেছনে একটি গ্রুপ জড়িত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওয়ালী উল্লাহর সূত্রে  জানা যায়, ঘাতক হাবিবুর রহমান স্থানীয় ভাবে জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ছুরিকাঘোতের পর উপস্থিত লোকজন গণপিটুনি দিলে হাবিবুর গুরুতর আহত হলে সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

    উল্লেখ্য, স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, সূত্রটি বলেন, জামাত শিবির ও হেফাজত বিরোধি  হওয়ার কারনেই তাকে হত্যা করা হয়েছে,কারন নিহত আবু সৈয়দ সুন্নি জামাতের একজন পুর্ন সমর্থক ছিলেন।তার কারনে এলাকাতে জামাত হেফাজতের কাজ কর্ম করতে কিছুটা বেগ পেতে হতো।