গাজীপুরে জঙ্গি আস্তানায় গভীর রাতে র‍্যাবের অভিযানে:নিহত-২

    0
    217

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮ডিসেম্বরঃ গাজীপুর মহানগরের একটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ রোববার গভীর রাতে র‍্যাবের অভিযানে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত দুই ব্যক্তি গতকালই কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর র‍্যাবের হেফাজতে ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

    র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রোববার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাসের একটি পরিত্যক্ত ভবনে অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় র‍্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে জেএমবি জঙ্গিরা। এ সময় র‍্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই জঙ্গি নিহত হয়। ভোররাতে নিহত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

    র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান রাত সোয়া দুইটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করে জানান, জায়গাটি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির একটি আস্তানা। ঘটনাস্থল থেকে চারটি অবিস্ফোরিত হাতে তৈরি গ্রেনেড উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আর জঙ্গিদের বিস্ফোরিত বোমায় একজন র‍্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। জঙ্গিদের কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক, ডেটোনেটরসহ গ্রেনেড তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, সড়কের পাশের পরিত্যক্ত ওই জায়গায় জঙ্গিরা সভা করত বলে তাদের কাছে খবর ছিল। র‍্যাব সদস্যরা জায়গাটি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করেন। এখান থেকে কেউ পালাতে পারেনি। তারা জেএমবির সদস্য বলে জানালেও নিহত দুই ব্যক্তির নাম জানা যায়নি বলে তিনি জানান। তবে তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে ধারণা মুফতি মাহমুদের।

    তবে, জয়দেবপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, র‍্যাব-১-এর সদস্যরা এ অভিযান চালান। নিহত দুজনের নাম মিনহাজুল ও মাহবুব বলে পুলিশ জানিয়েছে।

    এদিকে, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ গতকাল গভীর রাতে জানান, গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দী ছিলেন জঙ্গি মিনহাজুল ও মাহবুব। গতকাল দুপুরে তাদের দুজনের জামিন হয়। তারা কারাগার থেকে জামিনে বের হলে র‍্যাব-১-এর সদস্যরা ওই দুই জঙ্গিকে হেফাজতে নেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে র‍্যাব তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। র‍্যাবের গুলির বিষয়টি তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছেন।

    এর আগে শনিবার গভীর রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখান থেকে একটি ‘স্নাইপার রাইফেল’, গুলি, বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, সেনাবাহিনীর ১২ সেট পোশাক এবং জেএমবির কিছু সাংগঠনিক কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

     গত শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি আস্তানাটির সন্ধান পাওয়া গেছে।

     পুলিশ বলছে, এই তিনজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে যুক্ত। তারা জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার মো. ফারদিন ওরফে নোমানের সহযোগী। এই ফারদিনকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। আটক এই তিনজন জানিয়েছেন, ফারদিন কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলে গেছেন।

     চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আবদুল জলিল মণ্ডল গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন,উদ্ধার হওয়া এমকে ১১ স্নাইপার রাইফেলটি আমেরিকার তৈরি এটি দিয়ে প্রতি মিনিটে ৭৫০ টি গুলি করা যায়।

    তিনি বলেন, বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে জঙ্গিরা এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত করেছিল।

     প্রসঙ্গত, এর আগে ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঘাঁটি ঈশা খাঁর দুটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নৌবাহিনীর দুই বেসামরিক কর্মচারী আটক হন।ইরনা