গম সংগ্রহ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা

    0
    325

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১জুন:ব্রাজিল থেকে পচা গম আমদানি নিয়ে দেশব্যাপী যখন ব্যাপক সমালোচনা চলছে ঠিক তখনই কৃষকদের কাছ থেকে গম সংগ্রহ নিয়ে সরকারি কেলেঙ্কারির আরও একটি খবর ফাঁস হয়েছে।

    আজ ঢাকার একটি দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রয়োজন নেই কিন্তু মন্ত্রী-সংসদ সদস্য ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের স্বার্থে অতরিক্ত এক লাখ টন গম সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাও আবার বাজারদরের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশিতে। এতে  সরকারের ক্ষতি হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

    সরকারি গুদামে বর্তমানে ৩ লাখ ১৫ হাজার টন গম রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গমের দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা। রাশিয়া থেকে আনা গম পরিবহন খরচসহ দেশের বাজারে পড়ে ১৯ টাকা কেজি। আর সরকার নিজেদের লকদের কাছ থেকে কিনছে ২৮ টাকা দরে। প্রতি কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা মুনাফার কারণে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা সরকারি গুদামে গম সরবরাহে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

    সরকারি গুদামে গম সংগ্রহ বাড়াতে সরকারদলীয় ৮০ জন নেতা ইতোমধ্যে খাদ্যমন্ত্রীর কাছে চাহিদাপত্র বা ডিও লেটার পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন মন্ত্রী, ৬০ জন সংসদ সদস্য  এবং সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যের সদের মনোনীত ব্যক্তিরা গম সরবরাহ করছেন। আর বেশ কয়েকটি এলাকায় সংসদ সদস্য  নিজেই গম সরবরাহ করেছেন।

    গত ১ এপ্রিল খাদ্য অধিদপ্তরের যে সভায় দেড় লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়,সেখানে প্রথম সিদ্ধান্তটি ছিল- কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি গম সংগ্রহ করতে হবে।

    ৩০ জুনের মধ্যে ওই দেড় লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হলেও প্রথম দেড় মাসেই লক্ষ্যমাত্রার পুরো গমই সংগ্রহ হয়ে যায়। এখন  মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের চাহিদাপত্র ও সুপারিশে খাদ্য মন্ত্রণালয় বাড়তি এক লাখ টন গম সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে গম সংগ্রহ করছি। সংসদ সদস্য বা স্থানীয়  চেয়ারম্যানরা তাঁর এলাকায় বরাদ্দ রাখার জন্য চাহিদাপত্র পাঠাতেই পারেন। এটা দোষের কিছু না। তবে আমরা কৃষক ছাড়া অন্য কারও কাছ থেকে গম নিচ্ছি না।’

    এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন রেডিও তেহরানকে বলেন, আন্দোলনের মুখে কিছু কিছু জায়গায় সরকার অল্প পরিমাণ গম কৃষকদের কাছ থেকে কিনলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের দলীয় লোকজন বা টাউট-বাটপারদের কাছ থেকে কিনছে।

    তিনি উল্লেখ করেন- দেশে একটা লুটপাটের রাজনীতি চলছে, তাই প্রয়োজন না হলেও বিদেশ থেকে বেশী দামে পচা গম কিনে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে দলীয় লোকজন, টাউট ও দুর্নীতিবাজ আমলারা।

    সরকারের গম কেলেঙ্কারির তীব্র সমালোচনা করে বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল ও গণমানুষের প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার।

    অনুরুপ অভিমত ব্যক্ত করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও  বলেন, দেশে এখন যে লুটপাটের রাজনীতি চলছে তার বিরুদ্ধে জনগণের সোচ্চার আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।সুত্রঃইরনা