খেলোয়াড়দের বৃদ্ধ বয়সে যেন কষ্ট না করতে হয়ঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    239

    সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি শেষ বয়সে খেলোয়াড়দের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। খেলোয়াড়দের বৃদ্ধ বয়সে যেন কষ্ট না করতে হয়, সেজন্য তাদের পুনর্বাসন করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

    মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা হয়। এতে এসব নির্দেশনা দেন ও খেলোয়াড়দের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর এসব বার্তা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

    পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘খেলা নিয়ে সবার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের তিনি সন্তানের মতো মনে করেন। সাকিব, মুশফিক এদের সম্পর্কে খুব ভালো মন্তব্য করেছেন। এদের নিয়ে আরও কিছু করতে চান। এদের আরও সুযোগ-সুবিধা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে তিনি।’

    কলসিন্দুরের ফুটবল খেলা মেয়েদেরও সুবিধা দেয়া হবে বলে জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘উনার নির্দেশনাটা হলো খেলোয়াড়দের শুধু খেলাকালীন সময়ে নয়, তারা যখন পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের মতো বার্ধক্যে যাবে, তখন খুব কষ্ট হয়। তিনি এ সম্পর্কে অবহিত। কম বয়সে খরচ করে ফেলে, টাকা জমায় না। ঠকা খায়। নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, আমরা এটা হতে দেব না।’

    ‘এখন যেমন তাদের সাহায্য দেব, তাদের মাথায় হাত রাখব, পরবর্তী পর্যায়েও তারা যেন নিচে না পড়ে যায়, এজন্য ক্রিয়া মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট অর্ডার দিয়েছেন। তাদের বলেছেন প্রকল্প নিয়ে আস’, প্রধানমন্ত্রীর বরাতে বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

    ‘তিনি আশা করেন, আমাদের বিভিন্ন সেক্টর, কর্পোরেশন বা প্রাইভেট সেক্টর বা সরকার– বিভিন্ন জায়গায় তাদেরকে চাকরি-বাকরি দিয়ে রিহেবিলিটেশনের (পুনর্বাসন) একটা ব্যবস্থা করার জন্য।’

    প্র্যাক্টিসের জন্য তহবিল

    সারা বছর চর্চা করার জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য- খেলা আসলেই প্র্যাকটিস শুরু হয়। তারপর আর খবর নাই। তার কথা হলো যে খেলোয়াড় পেশাজীবী, সে সারা বছরই প্র্যাকটিস করবে। খেলোয়াড় তো নিজের পয়সায় করবে না, কেন করবে? তিনি চান, একটা ভালো তহবিল থাকবে। যেন এই তহবিলের আওতায় তারা সারা বছর প্র্যাকটিস করতে পারে।’

    মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (খেলোয়াড়) কর্তৃপক্ষ আছে, তারাই এটা করবে। সরকার শুধু টাকা দেবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন এর জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।’

    তির, ধনুক যেন মরে না যায়

    খেলা বলতে শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবল, হকি, ভলিবল, বাস্কেট বল, সব ধরনের খেলাকেই সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শুটিং ও আর্চারিতেও আমাদের সম্ভাবনা আছে। সেখানে ইনটেনসিভ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি।’

    এম এ মান্নান বলেন, ‘আর্চারির কথা বলতে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) এটাও বলেছেন, শুধু পশ্চিমা আর্চারি নয়। আমাদের এখানে তির, ধনুক, বল্লম রয়েছে। আমাদের সাওতালরা ব্রিটিশদেরকে তির, ধনুক দিয়ে তাড়াতে চেয়েছিল। সেই তির, ধুনকও যাতে মরে না যায় এবং বিকশিত হয়, সেজন্য তহবিল, প্রশিক্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

    ১০ প্রকল্পের অনুমোদন

    জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ৬ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ৬ হাজার ৬৮৬ কোটি, সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন ২৪২ কোটি এবং প্রকল্প ঋণ ৪০ টাকার কোটি টাকা।

    অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘বামনডাংগা (গাইবান্ধা)-শঠিবাড়ী-আফতাবগঞ্জ (দিনাজপুর) জেলা মহাসড়ক (জেড-৫০১৩)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন জোনের প্রধান সংযোগ রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্প; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা-এর ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প এবং ‘মানিকগঞ্জ বহুতল বিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ২১টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ নবরূপায়ন’ প্রকল্প; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ, কোনাবাড়ী, গাজীপুর’ প্রকল্প; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ওয়েস্ট জোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও আপগ্রেডেশন’ প্রকল্প। দৈনিক জনকণ্ঠ থেকে