খাসিয়ার গুলিতে নিহতের লাশ ৬ দিনে ফেরত পায়নি পরিবার

    0
    269

    রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি:সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তের সিঙ্গারীপার এলাকায় ৩ ফেব্রুয়ারী রবিবার খাসিয়ার গুলিতে ১জন নিহত, ২জন আহত হয়। ৬দিন পেরিয়ে গেলেও নিহত আলমগীরের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। লাশ ফেরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশীরা ১খাসিয়াকে ধরে আনে। খাসিয়াকে ফেরত পেতে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশী ২জন শ্রমিক আটক করে। অবশেষে পতাকা বৈঠকের মধ্যে উভয় দেশের আটকদের হস্তান্তর হলেও আলমগীরের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।
    সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানাযায়- গত ৩ ফেব্রুয়ারী রবিবার সকালে সীমান্তের ওপারে ১৩০৩ নং আর্ন্তজাতিক পিলাররের ৯এস পিলার এলাকায় ঝুম কাজে যায় বাংলাদেশি ৩শ্রমিক। মদ্রপ অবস্থায় ক্যানসেলা পাহাড়ে থাকা ভারতীয় খাসিয়া অর্তকিত ভাবে শ্রমিকদের লক্ষ করে গুলি ছুড়তে থাকে। খাসিয়ার গুলিতে ১বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয় এবং ২জন শ্রমিক আহত হয়। নিহত শ্রমিক জৈন্তাপুর উপজেলার নয়াখেল পূর্ব বালিদাঁড়া গ্রামের আব্দুল খালিক উরফে ভূসা খালিকের ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন(২৮)। আহতরা হল জৈন্তাপুর উপজেলার নয়াখেল পূর্ব বালিদাঁড়া গ্রামের যতি গোয়ালার ছেলে বর্তমান ধর্ম পিতা সিরাজুল হকের ছেলে মোঃ আব্দুল্লাহ(৩২), এবং কানাইঘাট উপজেলার বড়বন্দ (৩য়খন্ড) গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন(৩০)। এঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আব্দুল্লাহ ও নাজিম পালিয়ে এসে রক্ষা পায়। কিন্তু মাদকাসক্ত খাসিয়া আলমগীরের লাশ নিয়ে যেতে দেখেন। ঘটনার পর পর নিহতের পিতা আব্দুল খালিক জৈন্তাপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করে যাহার নং-২৬৯, তারিখঃ ০৬-০২-২০১৯। অপরদিকে ৫দিন অতিবাহিত হলেও লাশ ফেরত না পাওয়ায় নিহতের পিতা সিঙ্গারীপাড় এলাকা হতে উয়েন খাসিয়া(৩৮) নামের ব্যক্তিকে আটক করে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরে খাসিয়া ধরে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে সীমান্তের ওপারে কর্মরত কানাইঘাট বাউরভাগ এলাকার ২জন বাংলাদেশি শ্রমিককে ধরে রাখে খাসিয়ারা। এনিয়ে উভয় সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে গতকাল ৮ জানুয়ারী শুক্রবার বিকাল ৩টায় সুরইঘাট সীমান্ত ফাড়ির নানকা চা-বাগান এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে উভয় দেশের আটকদের হস্তান্তর করা হলেও নিহত আলমগীরের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।
    এদিকে লাশের অপক্ষোয় আহাজারী করছে নিহতের আত্মীয় স্বজন সহ স্ত্রী সন্তানেরা। কবে তাদের অপেক্ষার শেষ হবে কিছুই জানেন না তারা। নিহতের পিতা আব্দুল খালিক প্রতিবেদককে জানান- আলমগীরের স্ত্রী ৩মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাছুমা বেগম (২২) স্বামীর জন্য বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছে। এছাড়া অবুজ দুটি কন্যা সন্তান মায়ের কান্নায় অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। নিহতের পিতা আরও বলেন আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিএসএফ যদি তার সন্তানের লাশ ফেরত না দেয় তাহলে পুনরায় ভারত হতে খাসিয়া ধরে নিয়ে আসব।
    এবিষয়ে সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার এমদাদ প্রতিবেদকে জানান- সীমান্তের এরকম হত্যার ঘটনার সংবাদ আমাদের জানানেই বা এঘটনায় কোন স্বাক্ষ্যপ্রমান তারা দেখাতে পারেনি। তবে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় আটক উভয়দেশের নাগরিকদের মিট পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারপরও বিজিবি’র পক্ষ থেকে বিএসএফ’র কোম্পানী কমান্ডারের নিকট হত্যা কান্ডের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তারা খোঁজ খবর নিয়ে আমাদেরকে জানাবে।