কয়েকযুগ ধরে ঠেলাগাড়িই আব্দুল আহাদের ভরসা

0
823

নূরুজ্জামান ফারুকী, নবীগঞ্জঃ সমাজে অনেকের সম্পদ বেশি। অনেকের সম্পদ স্বল্প। আবার অনেক নিঃস্ব। এমন ও আছেন জীবন সংগ্রাম করে পরিবারের ভরণপোষন চালাতে হচ্ছে। আব্দুল আহাদ জীবন সংগ্রাম করে দুইযুগ যাবত ঠেলা গাড়ি চালিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার উপার্জন থেকে অন্যের বাড়ি যাযাবরের মতো চলা থেকে মুক্তি পেয়ে সাত শতাংশ ভুমিতে ইট দিয়ে থাকার মতো ঘর র্নিমান ও তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। পিতা-মাতার দাফন কাপনের ব্যবস্থা ও সাধ্যমতো কুলখানি করেছেন। তিনি হচ্ছেন- হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের রঘু দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নানের পুত্র মোঃ আব্দুল আহাদ (৫০) ওরফে ঠেলা চালক। এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সুত্রে তার বিষয়ে জানা গেছে, প্রায় পাঁচযুগ পূর্বে তার পিতা ওই গ্রামের রফিক শাহ এর বোন কুলসুমকে বিয়ে করে ঘরজামাই হয়ে বসবাস শুরু করেন। চার কন্যা এবং একমাত্র পুত্র আব্দুল আহাদ। কন্যাদের বিভিন্ন লোকদের সাহায্য নিয়ে পাত্রের কাছে তুলে দেন। পুত্র আব্দুল আহাদ পার্শ্ববর্তী মিনাজপুর গ্রামে বিয়ে করেন। এক কন্যা জন্মেও পর তাদের বিয়ের বিচ্ছেদ ঘটে। পরে বাগাউড়া গ্রামে বিয়ে করেন। পাঁচ কন্যা জন্ম নেয়। আহাদ কোন উপায় না পেয়ে পুরনো একটি ঠেলাগাড়ি পাচশঁ টাকায় ক্রয় করেন। পুরোদমে ঠেলাগাড়ি দিয়ে লোকজনদের বিভিন্ন মালপত্র বহন করে প্রতিদিন নামেমাত্র কিছু টাকা উপার্জন করেন। তার দিকে নজর পড়ে বদরুল ইসলাম বকুল নামের একজন ইউপি সদস্যের। তিনি তাকে তার স-মিলের গাছ আনা নেয়ার দায়িত্ব দেন। আগের মতো আহাদের উপার্জনের চেয়ে এখন তার দ্বিগুন আয়।

প্রতিদিন ৫/৬শত টাকা আয় করা সম্ভব হয়। আস্তে-আস্তে তিনি সুদিন দেখেন। তার আত্মীয় শাহ বাহার আলীর ৭ শতাংশ ভুমি ৩১ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। রেজিষ্ট্রিসহ তার প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। পাকা ঘর করতে প্রায় দেড়লক্ষ টাকা খরচ করেন। কয়েক বছরের মাথায় তিন কন্যাকে সাধ্যমতো খরচ করে পাত্রের কাছে তুলে দেন। পিতা-মাতার দাফন কাপন ও শিরনী সাধ্যমতো করেন। বর্তমানে তার দুই কন্যা স্ত্রী নিয়ে ঠেলাগাড়ি চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় তাকে আউশকান্দি বাজার পেয়ে গাড়িসহ মালামাল নেয়ার সময় ছবি তোলা হয়। নির্ভরযোগ্য সুত্রে আরো জানা গেছে, বর্তমানে ঠেলাগাড়ি চালিয়ে সংসার চালানো তার কষ্টসাধ্য হচ্ছে। আগের মতো স-মিলে গাছ নিয়ে লোকজন আসেননা এবং তার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় সবসময় পেশায় সময় দিতে পারছেন না। তার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফকরুল ইসলাম জুয়েল জানান,আব্দুল আহাদ প্রায় দীর্ঘদিন যাবত ঠেলাগাড়ি চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। সরকারের বিভিন্ন সাহায্যে সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য তিনি।