আমারসিলেট24ডটকম,০১এপ্রিলঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সব সময় অপর দেশ বা সংস্থার সহায়তাকে স্বাগত জানায়। তবে দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন শর্তযুক্ত কোনো সহায়তা চায় না। তিনি বলেন, “আমরা সবসময় অপর দেশ বা সংস্থার সহায়তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু কখনো দেশের জন্য ক্ষতিকর শর্তযুক্ত সহায়তা গ্রহণ করব না।”
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিলিপ লি হিউরো আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পৃথিবীর প্রতিটি দেশের নিজস্ব উন্নয়ন দর্শন রয়েছে। সংস্কৃতি, প্রকৃতি, পরিবেশ, মনস্তত্ত্ব এবং ভৌগলিক পরিবেশগত বৈশষ্ট্যকে কেন্দ্র করে এই দর্শন গড়ে ওঠে।”
বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিগত কয়েক বছরে শিক্ষা ও স্থাস্থ্য খাতসহ নারীর ক্ষমতায়ন এবং ছয় ভাগেরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারের অভাবনীয় সাফল্যের উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সাফল্যের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও সরকারের প্রশংসা করেন।
ফিলিপ লি হিউরো বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহায়তাদানে তার সংস্থার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে চলতি অর্থবছরে ২৮০ কোটি ডলার প্রদানের অঙ্গীকার এবং গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগে ১৭৩ কোটি ডলারের সহয়তা চুক্তি সম্পাদন করেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ এবং এ ক্ষেত্রে সহায়তার আগ্রহও প্রকাশ করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী দিন দিন আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারত এবং বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মধ্যকার দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ খাতে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের বাস্তবমুখী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের উপর রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২১ সাল নাগাদ এই প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিট অতিক্রম করবে।
প্রধানমন্ত্রী গত সোমবারের রেকর্ড পরিমাণ সাত হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিদ্যুতের সিস্টেম লস ৪০ ভাগ থেকে ১২ ভাগে নেমে এসেছে। তিনি আরো বলেন, নারী ও শিশু পাচার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশে কার্যালয় স্থাপনের পর থেকে বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে ফিলিপ লি হিউরো বলেন, তাঁর সংস্থা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সব সময় বাংলাদেশের সাথে থাকবে।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি বুঝতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, অ্যাম্বসেডর এট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, মুখ্যসচিব আব্দুস সোবহান সিকদার ও বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল এ সময় ।