কোনো মুসলমান কি কোরআন শরিফে আগুন দিতে পারে? প্রধানমন্ত্রী

    0
    210

    আমার সিলেট ডেস্ক,৩০ আগস্ট : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। জিয়াউর রহমান জোর করে ক্ষমতা দখল করে সেই বিচার বন্ধ করে দেন এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছিলেন। তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী, উপদেষ্টা বানিয়ে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। আর আমরা সেই খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছি। যারা এ দেশে গণহত্যা করেছিল সেই খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। তিনি আরো বলেন, বাবা-মাসহ পুরো পরিবারকে হারানোর শোক-ব্যথা বুকে নিয়েও আমি রাজনীতি করি। আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য, বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। প্রয়োজন হলে বাবার মতোই বুকের রক্ত দিয়ে হলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে এবং উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
    আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ জনসভা শুরু হয় দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে। শুরুতেই সকল ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।
    মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে এ জনসভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি, তোফায়েল আহমেদ এমপি, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, সতীশ চন্দ্র রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা-১২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে নুর তাপস প্রমুখ।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়, দেশের মানুষ কিছু পায়। আমরা ক্ষমতায় এসে নানাবিধ উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। জনগণের পাচার করা অর্থ আমরা ফিরিয়ে এনেছি। অন্যদিকে বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই নির্যাতন করেছে। দুর্নীতি করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এখন তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধে উঠে-পড়ে লেগেছেন। আমরা উন্নয়ন করি, আর বিএনপি করে সন্ত্রাস, হত্যা, দুর্নীতি। আমরা দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাই, আর তারা ক্ষমতায় এসে আবার পিছনে ফেলে দেয়।
    বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগে যে ওয়াদা দেয়, সে ওয়াদা রাখে। রমজান মাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। এতে নির্বিঘ্নে মা-বোনেরাও রাত ২টা-৩টা পর্যন্ত বাজার করেছে। জনগণের হাতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার তুলে দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের হাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি তুলে দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ওয়াদা পালন করে যাচ্ছি। ঢাকার যানজট নিরসনে কুড়িল, মিরপুর-এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছি। মেট্রোরেল ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।
    জামায়াত-হেফাজত সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, জামায়াত-শিবির-হেফাজত বায়তুল মোকারম মসজিদে পর্যন্ত আগুন দিয়েছিল। পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়েছিল। শুক্রবার নামাজ পড়তেও দেয়নি তারা। মুসলমানদের প্রতি প্রশ্ন রাখে তিনি বলেন, কোনো মুসলমান কি বায়তুল মোকাররম মসজিদে কোরআন শরিফে আগুন দিতে পারে?
    প্রসঙ্গত বিএনপির নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি নাকচ করে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সংবিধান থেকে একচুলও নড়বে না। তার ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে গত ২০ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জনগণের আন্দোলনের বাতাসে গেলেই কিন্তু চুল উড়ে যাবে। এমন আন্দোলন হবে, চুল উড়ে দিশেহারা হয়ে যাবেন। চুল তো থাকবেই না, অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি পড়বে।
    তার ওই বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় বলেন, যার মাথা থেকে পা পর্যন্ত নকল, উড়ে যাওয়ার ভয় তার আছে, আমার নেই। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেছেন, উনার আন্দোলনের বাতাসে আমার চুল নাকি উড়ে যাবে। আমি তো ঘোমটা দিয়ে থাকি, চুল দেখাতে পারি না। আমার কিন্তু পরচুলা পড়া নাই। যা আছে আসলই আছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে অবৈধভাবে বাস করছিলেন। সেই বাড়ি থেকে আমরা উৎখাত করিনি। উনি মামলা করে হেরে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, উনি কি বিলাসিতায় সেই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। মামলায় হেরে বাড়ি হারিয়ে তিনি যেমন কেঁদেছেন! ৮১ সালে স্বামীকে হারিয়েও তাকে এমনভাবে কাঁদতে দেখিনি।