কাল রবিবার ৯১টি উপজেলায় ভোটঃপ্রস্তুতি সম্পন্ন

    0
    246

    আমারসিলেট24ডটকম,২২মার্চঃ দেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে আগামীকাল রবিবার ৪৩ জেলার ৯১ উপজেলায় এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্য রাত থেকেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব উপজেলায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে শুক্রবার থেকেই মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। সাথে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্য। এছাড়াও ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের যান্ত্রিক যান চলাচলও। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে এসব উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ৪২ জেলার ৯২ উপজেলার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলেও পরে ধামরাইকে এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। আর আদালতের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে শেরপুর সদর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাচন। আশঙ্কা আছে তৃতীয় ধাপের মতো চতুর্থ পর্যায়ের নির্বাচনও সহিংস হয়ে উঠতে পারে। নির্বাচন কমিশনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিদিনই আবেদন করছেন।

    যশোর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী সেখানে কিভাবে ভোট জালিয়াতি হতে যাচ্ছে, কাদের নিয়ে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন দল গঠন করা হয়েছে তার তালিকা পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। সেই সাথে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকাও পাঠিয়েছেন তিনি।
    কমিশনের কাছে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো.ঃ শাহিদুল ইসলাম মুকুলের অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপনের কর্মীরা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তার সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এমনকি এমন ঘোষণাও দেয়া হয়েছে- ভোটকেন্দ্রে গেলে তাদের হাত পা কেটে নেয়া হবে। শাহিদুল ইসলাম এর প্রমাণ হিসেবে নির্বাচন কমিশনে একটি ভিডিও সিডিও জমা দিয়েছেন।
    কমিশনের কাছে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেছেন, ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ওপর স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা ও তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিএনপি সমর্থক ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু এসব অভিযোগ নির্বাচন কমিশন আমলে নিচ্ছে না।
    বৃহস্পতিবার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ  সিরাজুল ইসলামের কাছে সাংবাদিকরা এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব সময় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এ জন্য যা করা দরকার আমরা তাই করছি। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন এবং নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া আছে।
    ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য মুখের কথা যথেষ্ট নয়। তাই আমরা কাজ করছি। ২৩ মার্চ নির্বাচনের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন। সহিংসতা রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যর্থ হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া আছে। সাতক্ষীরায় হাত-পা কেটে নেয়ার হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে পৌঁছেনি। অভিযোগ যদি সত্য হয় অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
    অপরদিকে, তৃতীয় দফার এ ভোটে ৮১ উপজেলায় বৃহস্পতিবার দিবাগাত মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ থাকবে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। আইন ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জেল ও আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।