কমলগঞ্জে মহিলার উচ্ছৃংখল আচরনে এলাকাবাসী অতিষ্ট 

    0
    402

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১০আগস্ট,শাব্বির এলাহী: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামে তালাকপ্রাপ্ত মহিলার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের প্ররোচনায় এক তালাকপ্রাপ্ত মহিলা কর্তৃক প্রতিপক্ষের এক ব্যক্তিকে দা দিয়ে প্রানাশের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী দা সহ মহিলাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ্দ করেন। উচ্ছৃংখল এই মহিলা আটক হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।

    সরেজমিন খোঁজ নিয়ে এলাকাবাসী জানান, কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ (লংগাই) গ্রামের মো. খিজির আহমদ (৫৩) একই গ্রামের ভাগিনা সম্পর্কিত করম আলীর ছেলে হারুনুর রশীদ (৩০) কে দুই কেদার জমি ক্ষেত করার জন্য দেন। খিজির আহমদ তার স্ত্রী সমিত্তা বেগম (৪০) কে পরকীয়ার কারণে এক বছর পূর্বে তালাক দেন। তালাক দেওয়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ আলীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। মাহমুদ আলীর প্ররোচনায় সম্পত্তি দখলের জন্য গত শনিবার (৮ আগষ্ট) সকাল ১০টায় সমিত্তা বেগম দা দিয়ে হারুনুর রশীদের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারতে উদ্যত হলে হারুনের চিৎকারে স্থানীয়রা ঘবাড়ির লোকজন ছুটে এসে হারুনকে রক্ষা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী বড়চেগ গ্রামের শিরী বেগম, ফজিরুন বেগম, সেলিনা বেগম, রেফা বেগম, মরিয়ম বেগম জানান, সমিত্তা বেগমের কাছ থেকে জনৈক ইব্রাহীম মিয়া দা কেড়ে নেন। গ্রাম প ায়েতের সর্দার আপ্তাব মিয়া সহ স্থানীয় লোকজন এ সময় সমিত্তা বেগমকে দৌড়াইয়া পার্শ্ববর্তী মাও: আব্দুর রহমানের বাড়িতে আটকিয়ে রেখে কমলগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেন। এ ঘটনায় হারুনুর রশীদ কমলগঞ্জ থানায় সমিত্তা বেগমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার বেলা ২টায় কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. জাহিদুল হকের নের্তৃত্বে একদল পুলিশ দা সহ ৩ সন্তানের জননী সমিত্তা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। সমিত্তা আটকের সংবাদে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।

    এদিকে মানবিক কারণ বিবেচনায় উচ্ছৃংখল মহিলা সমিত্তাকে শনিবার রাতে তার ভাই পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসুর্য্য গ্রামের আপ্তার মিয়ার জিম্মায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এর আগে সমিত্তা বেগমের বিরুদ্ধে উচ্ছৃংখল আচরণ, প্রাণনাশ ও মিথ্যা মামলার হুমকির কারণে গত ১ আগষ্ট তারিখে বড়চেগ গ্রামের হারুনুর রশীদ বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী  (জি.ডি) করেন।

    এদিকে উক্ত অত্যাচারী মহিলার সাবেক স্বামী পঙ্গু খিজির মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ ২৪ বছর আমি প্রবাসে ছিলাম। প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে আমি স্ত্রী সমিত্তা বেগমকে ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমি সমিত্তার উচ্ছৃংখল চলাফেরা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ আলীর সাথে পরকীয়া বুঝতে পেরে ২০১৪ সালে তাকে ডিভোর্স দিয়েছি এবং তার সুখের জন্য স্থানীয় চৈত্রঘাট বাজারে একটি ঘরও বানিয়ে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, তার স্ত্রী সমিত্তা বেগমের অপকর্ম ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বড়চেগ গ্রামের নিজ বাড়ীতে আজ মৃত্যু শয্যায় আছি।  বড়চেগ গ্রামের শত শত জনসাধারণ স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ আলীর ইন্ধনে উক্ত মহিলার বিভিন্ন অপকর্ম সহ অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।

    ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে সমিত্তা বেগম জানান, ৩টি সন্তান নিয়ে আজ আমি বড় অসহায়। আমি ষড়যন্ত্রের স্বীকার। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ আলী সব ঘটনা জানেন বলে জানান।

    এ ব্যাপারে রহিমপুর ইউপির স্থানীয ওয়ার্ড সদস্য মাহমুদ আলীর বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

    কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. জাহিদুল হক জানান, সমিত্তা বেগমের অত্যাচারে বড়চেগ এলাকার লোকজন অতিষ্ট হয়ে উঠছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগে দা সহ মহিলাকে আটক করেছি। পরে মানবিক কারণে মুচলেকায় তিন সন্তানের জননী সমিত্তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।