কমলগঞ্জে এক গৃহকর্মীকে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দিয়েছে

    0
    268

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১ডিসেম্বর: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের এক গৃহকর্মীর গায়ে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর আবার গৃহকর্র্তা ও মেয়ে মিলে আবার ঝলসে যাওয়া গৃহকর্মীকে তিন দিন কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত গৃকর্মীকে তার বড় ভাই উদ্ধার করে রোববার (২০ ডিসেম্বর) কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ ডিসেম্বর বিকালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের আয়াজ মিয়া মহাজনের বাড়িতে।

    সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গৃহকর্মী কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের মৃত রহিম মিয়ার মেয়ে তাসলিমা আক্তার (২০) ঢেলে দেওয়া গরম পানিতে ডান হাতের কুনই ও পিটের ডান দিকের ঝলসে যাওয়া স্থান দেখিয়ে বলে, আয়াজ মিয়া মহাজনের মেয়ে নাঈমা আক্তার (১২) গরম পানি ঢেলে এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে।

    ঘটনার পর সন্ধ্যায় গৃহকর্তা বাড়িতে এসে বিষয়টি জানলে গৃহকর্তা জানান, গরম পানি নিয়ে আসার সময় নিজে পড়ে গিয়ে তাসলিমা ঝলসে গেছে। এর পর টানা তিন দিন শুধু মাত্র কয়েকটি নাপা ট্যাবলেট ছাড়া তাকে আর কোন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি। ঘটনার ৪ দিন পর উল্টো নানা অপবাদে আহত তাসলিমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সে পর পুরুষের সাথে পালাচ্ছে বলে তার (তাসলিমার) ভাই মধু মিয়াকে খবর দিলে, তার ভাই বড়কাপন গ্রামে গিয়ে বোনকে উদ্ধার করে এনে রোববার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

    কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত মেডিক্যাল সহকারী জাহিদুল ইসলাম জানান, ঝলসে যাওয়ার পরিমাণ ৬ দশমিক ৮৭ ভাগ হলেও পুড়ে যাওয়া স্থান কিছুটা গুরুতর। গৃহকর্মী তাসলিমার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মুঠোফোনে (০১৭৯৮২৩৪৫৯১) আয়াজ মিয়ার স্ত্রী সুলতানা আক্তার বলেন, আসলে বালতিতে করে গরম পানি নিয়ে আসার সময় নিজে পড়ে গিয়ে সে আহত হয়েছে। তাসলিমা যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়। সে সব সময় মিথ্যা কথা বলে। এমনকি তাসলিমার পর পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে, তাতে বাঁধা দেওয়ায় এখন সে মিথ্যাচার করছে। ঘটনার পর চারদিনে তার কোন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে গৃহকর্তা কোন কথা বলেননি।

    কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শফি সোমবার বিকালে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে আহত তাসলিমাকে দেখে এ প্রতিনিধিকে বলেন, গরম পানি মাকে আগে দেওয়াকে কেন্দ্র করে মেয়ে অমানসিকভাবে গরম পানি ঢেলে তাকে (তাসলিমাকে) ঝলসে দিয়েছে। তার পর আবার মারধর এমনকি তাকে কোন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শফি বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হবে।