কমলগঞ্জে ইউটিউব দেখে অস্ট্রেলিয়ান আপেল কুল চাষ প্রবাসীর ভাগ্য বদল

0
502
কমলগঞ্জে ইউটিউব দেখে অস্ট্রেলিয়ান আপেল কুল চাষ প্রবাসীর ভাগ্য বদল

শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: ইউটিউব দেখে উৎসাহিত হয়ে ৩০হাজার টাকা ব্যয়ে পৈতৃক ২৫ শতাংশ জমিতে অষ্ট্রেলিয়ান আপেল কুল(বরই) চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপন্ দেখেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিদেশ ফেরত আব্দুস সালাম।৮ মাসের মাথায় সবকটি গাছেই কুল ধরে আছে।এখন অনলাইনে প্রতি সপ্তাহে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার বরই বিক্রয় করেন তিনি। দিন যতোই যাচ্ছে ততোই চাহিদা বাড়ছে। তার এই বরই বাগান দেখে আগ্রহী হচ্ছে উপজেলার অনেক ছাত্র ছাত্রী, যুবক ও কৃষকেরা।  এই মৌসুমে তার বাগানের প্রতিটি গাছে অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী আপলে কুল ছেয়ে আছে। ফলের ভারে গাছসহ ডালগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে আগলে রাখা হয়েছে প্রতিটি গাছ। পাখি ও চুরের হাত থেকে বরই রক্ষায় পুরো বাগান চারপাশে জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। বাগান পাহারা দেওয়ার জন্য বাগানের এক পাশে উঁচু করে মাচা করে রেখেছেন।

এই ধরনের বড়ই চাষ করে আব্দুস সালাম এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। কমলগঞ্জ পৌর এলাকার কুমড়াকাপন গ্রামের কৃষক আব্দুল খালিকের ছেলে আব্দুস সালাম, ভাগ্য বদলের আশায় দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার ৩ বছর পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। খালি হাতে দেশে ফিরে আসেন।দেশে আসার পর আব্দুস সালাম আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদে নানান চেষ্টা করেন। এ বছরের এপ্রিল মাসে তার ছোট ভাই সাবেদ আলীর সহযোগিতায় মেহের পুর জেলা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ১৬০টি চারা কুড়িয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আনেন,তখন চারা রোপনের পর পরে ১০টি চারা মারা যায়। সালাম ও তার ভাই সাবেদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিচর্যায় মাত্র ৮ মাসের মাথায় ডিসেম্বরে সবকটি গাছেই কুল ধরে। এখন প্রতিটি গাছে ঝুলছে পাকা কুল। এই কুল বরই দিয়েই অবশেষে ভাগ্য পাল্টানোর আশায় আব্দুস সালামের মুখে হাসি ফুটে।

তিনি আশা করছেন, প্রায় এক লাখ টাকার অধিক বল সুন্দরী কুল বরই বিক্রি করতে পারবেন। তবে এই কুল চাষে তেমন খরচ নেই বলে জানান সালাম। শুধু চারা সংগ্রহ করতেই একটু সমস্যা। আব্দুস সালাম ও তার ভাই সাবেদ আলী বলেন, ‘ফেইসবুক ও ইউটিউব দেখে উদ্যোগ নেই আমরা। এরপর সরকারি সহযোগিতা ছাড়াই ব্যক্তিগত উদ্যোগে কুল চাষের জন্য ২৫ শতাংশ জমিতে অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী আপেল বরই চাষ শুরু করি। ভাবিনি এতো ফলন হবে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে কষ্ট করে হলেও আরো বড়ভাবে চাষের চেষ্টা করবো। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে আমার উপকার হবে এবং সহজেই বড় পরিসরে বল সুন্দরী কুল বরই চাষ করতে পারবো।এই উপজেলায় অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী আপলে কুল বরই এই প্রথম চাষ হয়েছে। অনলাইনে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। অনলাইনে চাহিদা বেশী থাকায় খুচরা বাজারে  তুলিনি।

কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ কৃষক আব্দুস সালামকে পৌরসভার পক্ষ থেকে সর্বদিক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান।এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, ’আমরা আব্দুস সালামকে আমারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।’