কমলগঞ্জের ছয়চিরি দিঘীর পাড়ে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা সমাপ্ত

    0
    268

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৫এপ্রিল,শাব্বির এলাহীঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের ছয়চিরী দিঘীর পারে দু’দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বুধবার সমাপ্ত হয়েছে। দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলাকে কেন্দ্র করে কমলগঞ্জের ছয়চিরিসহ আশেপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল। গত মঙ্গলবার ও বুধবার দু’দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী এই চড়ক উৎসব দেখতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে হাজার হাজার লোকের ঢল নেমেছিল।

    মঙ্গলবার দুপুর থেকে নারী পুরুষ দর্শনার্থীর বিশাল সমাগম ঘটে। বিকেল বেলা ভক্তরা মন্ডলীতে বিশাল দা (বলিছেদ) দিয়ে নৃত্য, শিবের নৃত্য ও কালীর নৃত্য দেখানো হয়। নৃত্য শেষে ঐতিহাসিক ছয়চিরি দিঘীতে স্নান করে ভক্তদেরকে লোহার শিকড় শরীরের বিভিন্ন অংশে পিষ্ট (গাঁথা) করা হয়। বিশেষ করে জিহ্নবা ও গলায় গেঁথে দেয়া হয়। নৃত্যের তালে তালে চড়ক গাছ ঘুরানো হয়। দেবতার পূজা-অর্চনা শেষে অপরাহ্নে মূল সন্ন্যাসী ৪ জন ভক্তের (জ্যান্ত মানুষের) পিঠে লোহার দু’টি করে বিরাট আকৃতির বড়শি গেঁথে রশিতে বেঁধে ঝুলিয়ে চড়ক গাছ ঘুরানো হয়। এ সময়ে দর্শনার্থীদের অনেকে বাতাসা আর কলা উপরের দিকে উড়িয়ে দেন আর দর্শনার্থীরা তা কুড়িয়ে নেন।

    বুধবার ফেরা চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন দেবতার পূজা অর্চনা করা হয়। ঐতিহ্যবাহী ছয়চিরি দিঘীর চার পাড়ের মধ্যে দিঘীর পূর্বপাড়ে ১টি, উত্তর পাড়ে ১টি এবং দক্ষিন পাড়ে ২টি চড়ক গাছ স্থাপন করে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তান্ত্রিক মন্ত্রের ধারা বিভিন্ন অলৌকিক ধর্মীয় কর্মসূচী উপভোগ করার জন্য প্রতি বছরের মত এবারও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে দর্শনার্থীর উপস্থিতি ঘটেছিল। চড়ক পূজা উপলক্ষে এক বিশাল মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের বিভিন্ন রকমারী জিনিসপত্রের সয়লাব ছিল।