এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কমলগঞ্জের চা শ্রমিক সন্তান

    0
    195

    “বিশ্বজিত কৈরীর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কি পূরণ হবে”?

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৫জুন,শাব্বির এলাহী:নিজের ভিটে নেই। চা বাগানের ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করে অভাবী সংসারে ঠিকমতো দু’বেলা ভাত জোটেনি, কখনো জোটেনি ভালো পোশাক। চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান হিসাবে পিতামাতার সাথে বসবাস করেন কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মদনমোহনপুর চা বাগানের এক ঝুঁপড়ি ঘরে। প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়া বা নতুন বই কেনার সামর্থ্য ছিল না অভিভাবকের। হতদরিদ্র চা শ্রমিক পিতা অযোধ্যা কৈরীর অভাবী সংসারে ছেলে বিশ্বজিত কৈরী ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কি পূরণ হবে?

    অভাবী সংসারে স্কুল ছাত্র বিশ্বজিত কৈরী পড়াশোনার ফাঁকে বাবার সাথে অন্যের জমিতে দিনমজুরীর কাজ করতো। এক ভাই ও এক বোনের পরিবারের বড় ছেলে মেধাবী ছাত্র বিশ্বজিত নিজের একান্ত আগ্রহ ও মেধার ভিত্তিতে অর্জন করেছে এ সাফল্য। কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তার এ জিপিএ-৫ লাভের ফলে উচ্ছ্বাসিত পরিবার। বিশ্বজিত জানায়, তাঁর এই সাফল্যের পেছনে পিতা-মাতা, বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও মাধবপুর চা বাগানের প্রাইভেট শিক্ষক ইন্দ্রজিত কৈরীর অবদান সবচেয়ে বেশি।

    দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ৪ জনের অভাবী সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি চা শ্রমিক অযোধ্যা কৈরী। বর্তমান বাজারে ৬৯ টাকা দৈনিক মজুরীতে পরিবারের সবার মুখে দু’বেলা খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। তাই পরিচিত জনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করেছিল বিশ্বজিত কৈরী। ছোট বোন সুমা কৈরী একই বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার এ সাফল্যে দরিদ্র পরিবারটির মাঝে বাঁধভাঙা আনন্দ নেমে এলেও একই সাথে বিশ্বজিতের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে অভাবী পিতা-মাতা।

    মেধাবী ছাত্র বিশ্বজিত কৈরী বড় হয়ে একজন ডাক্তার হতে চাইলেও অর্থের অভাবে কাঙ্খিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে কিনা তাই নিয়ে আনন্দের মাঝে উদ্বিগ্ন সে। বিশ্বজিত এখন পিতা মাতার কাছে তার সন্তানের মেধার এখন ধরণের বোঝা। কারণ অভাবের কারনে এখন তার পরিবার আর পারছেনা পড়া-লেখার খরচ চালাতে।

    বিজ্ঞান বিভাগ নিয়েই লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় বিশ্বজিত কৈরী। কিন্তু এই ইচ্ছা এখন এভারেষ্ট জয়ের চেয়েও কঠিন মনে হচ্ছে বিশ্বজিতের কাছে। কোন প্রকার আর্থিক সহযোগীতা না পেলে এখন বন্ধ হবে তার লেখা-পড়া। তার এ ফলাফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী ও এলাকাবাসী দারুন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সাধ্য মতো সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে সকলের প্রতি।