এবারও কারাগারেই ঈদ পালন করতে হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

    0
    232

    বাংলাদশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এবারও কারাগারেই ঈদ-উল-ফিতর পালন করতে হচ্ছে। দু’টি দুর্নীতির মামলায়  ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে তিনি বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে আটক রয়েছেন।

    ঈদের আগেই তাকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল বিএনপি, ২০ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ নাগরিক সমাজ। কিন্তু তার মুক্তি মেলেনি। ফলে, এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো তার ঈদ কাটবে স্বজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চার দেয়ালের বন্দী কক্ষে। এ অবস্থায় আজকেও কারাবন্দী বেগম জিয়াকে মুক্ত পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তার দল।

    আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলীয় চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর স্বজনদের সাথে ঈদ পালনের জন্য তার মুক্তি দাবি করে সরকারর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। রিজভী বলেন, ‘৭৪ বছর বয়সী গুরুতর অসুস্থ নারীকে আর বন্দী রাখবেন না। তাঁর সুচিকিৎসা ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ দিন।’

    রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। একদলীয় হানাদারি শাসনের ঘন অন্ধকার দূর করে আলোর প্রত্যাশা পূরণে খালেদা জিয়ার মুক্তি অপরিহার্য। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।’ রিজভীর বক্তব্য, ‘আপনারা মধ্যরাতের অভিনব ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকার জন্যই তাঁকে জেলে পুরেছিলেন, সেই কাজ তো ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতেই সেরে ফেলেছেন।’খবর পার্সটুডে

    বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে আইনি লড়াই ছাড়াও বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহ  রাজপথে মিছিল, গণঅনশন, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষরতা- এসব কর্মসূচিও পালন করেছে।

    তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকালও বিএনপি’র আন্দোলন সক্ষমতাকে কটাক্ষ করে বলেছেন, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য তার দল এমন কোন আন্দোলন করতে পারেনি যাতে সরকার বা আদালতের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি হয়।

    বিএনপি নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকার যে অনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যে সেটা তা পরিষ্কার হয়েছে। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য তারা আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই করছেন। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এখন আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টির কথা বলে কী বুঝাতে চাইছেন ওবায়দুল কাদের?

    উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে সাজার রায় ঘোষণার পর থেকে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন। ইতিমধ্যে সে মামলায় জামিন পেয়েছেন। তবে তিনি এক মামলায় জামিন পেলে অন্য মামলায় অটক দেখিয়ে মুক্তি আটকে দেয়া হয়। বর্তমানে তিন ডজনের বেশির মামলা  মোকাবেলা করছেন।

    এদিকে ঈদ উপলক্ষে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এবারে ঈদের এই খুশির দিনে আমরা বেদনার্ত। কারণ আমাদের মাঝে নেই গণতন্ত্রের প্রতীক, অধিকারহারা মানুষের আশা-ভরসার প্রেরণা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। নিষ্ঠুর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তাঁকে প্রায় দেড় বছর বন্দী করে রাখা হয়েছে। এই দিনে আমরা তাঁর মুক্তি ও সুস্থতার জন্য দোয়া করব। ঈদুল ফিতরের এই দিনে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা মহান আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করব।