এক হূদয়স্পর্শী ঘটনার সৃষ্টি জুরাইন কবরস্থানে

    1
    344

    আমার সিলেট  24 ডটকম,০৮নভেম্বরঃ বৃহস্পতিবার এই দৃশ্য ছিল জুরাইন কবরস্থানে। সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর বেওয়ারিশ হিসাবে দাফনকৃত ৩২২ শ্রমিকের মধ্যে ডিএনএ টেষ্টের মাধ্যমে শনাক্তকৃত ১৫৭ শ্রমিকের মধ্যে নিহত ৩০ জন শ্রমিকের পরিবার খুঁজে পান তাদের স্বজনের কবর। সাড়ে ৬ মাস পর স্বজনের কবরের সন্ধান পেয়ে এক মর্মস্পর্শী দৃশ্যের অবতারণা হয় জুরাইন কবরস্থানে। কেউ বিলাপ করতে করতে কবরের ওপর আছড়ে পড়ছেন, কেউ নির্বাক বসে আছেন কবর ছুঁয়ে, কেউবা স্বজনের কবরের পাশে বসে একমনে করছেন প্রার্থনা।রানা প্লাজা ধ্বসের পর নিহত মর্জিনার বাবা সফির উদ্দিন মেয়ের কবরের সন্ধান পেয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে যান। প্রখর রোদের মধ্যে তিনি কবরের পাশে বসে থাকেন। তিনি জানান, আল্লাহর কাছে তার আর কিছু চাওয়ার নেই।  মেয়ের কবরের সন্ধান পেয়েছেন এটিই তার জীবনের সবচে বড় পাওয়া।
    শাফিনুর বেগম অনেকক্ষণ ধরে খুঁজছিলেন কোন কবরটি তার মেয়ের কবর। বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি সংগঠনের নেতারা ডিএনএ নমুনা থেকে প্রাপ্ত নম্বর ও কবরে উল্লেখ করা নম্বরের সাথে মিলিয়ে দেখিয়ে দিলেন, এটিই তার মেয়ের কবর। মুহূর্তের মধ্যে শাফিনুর কবরের মধ্যে আছড়ে পড়লেন। আমার পাখিরে তুমি দেইখা রাইখো  বলে মেয়ের কবর ছুঁড়ে গড়াগড়ি করতে লাগলেন। এক হূদয়স্পর্শী ঘটনার সৃষ্টি হয়। পাগলের মত প্রলাপ বকতে থাকেন নিহত শহিদুলের স্ত্রী খাদিজা।

    কবরস্থান কতৃপক্ষও ৮ নম্বর কবরটি খুঁজে পাননি।কাল সাভার থেকে নিখোঁজ ৪০ টি পরিবারকে জুরাইন কবরস্থানে নিয়ে আসেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটির সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল জানান, ডিএনএ টেস্টে সনাক্তকৃত ১৫৭জন নিখোঁজ শ্রমিকের মধ্যে ৪০ টি পরিবারকে তা জুরাইন কবরস্থানে নিয়ে এসেছেন। এরমধ্যে ৩০ টি পরিবার তাদের স্বজনের কবর খুঁজে পেয়েছেন।গত কাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির ব্যানারে কবরস্থানে মৌন মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের কাছে তাদের কবর খুঁজে পেতে সহায়তা করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।