একনেকে ২হাজার ৫ শ ৯০ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প পাস

    0
    263

    আমারসিলেট24ডটকম,৩০এপ্রিলদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির আজকের সভায় ২ হাজার ৫ শ ৯০ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প পাস হয়। পাসকৃত প্রকল্প ৪টি হলো \”Skills for Employment Investment Program (SELP) (Phase-1)\”, “বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন (সংশোধিত)”, “সদর দপ্তর ও জেলা কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শক্তিশালীকরণ” এবং “ ইনহেন্সমেন্ট অব ক্যাপাসিটি অব গ্রীড সাবস্টেশন্স এন্ড ট্রান্সমিশন লাইন ফর রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন”। মোট প্রকল্প বরাদ্দের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬৩৬ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৭শ ৪৬কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল ২শ ৭ কোটি টাকা। ৪টি প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প ৩টি বাকি ১টি সংশোধিত প্রকল্প। ২টি প্রকল্প সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।
    গতকালকের একনেক সভায় “ ইনহেন্সমেন্ট অব ক্যাপাসিটি অব গ্রীড সাবস্টেশন্স এন্ড ট্রান্সমিশন লাইন ফর রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন” নামক প্রকল্পটি পাস হয়। মোট ১ হাজার ৩ শ ৩২ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকার এ প্রকল্পে সরকারি অর্থ ২ শ ১২ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২শ ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা এবং বাকি ৯শ ১২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ-এর কাছ থেকে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ১০৮.৫ কি.মি. নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, ২৮০ কি.মি. সঞ্চালন লাইন রিনোভেশনসহ ৬টি সাব-স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই, ২০১৪ হতে ডিসেম্বর, ২০১৭ পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রেস ব্রিফিং-এ পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, “পল্লী বিদ্যুৎ-এর ট্রান্সফরমারগুলো পুরোনো হয়ে যাওযায় তা প্রতিস্থাপনসহ নতুন সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে হবে।” মন্ত্রী বলেন, “আমরা একথা বলবো না যে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল, তবে আমরা বিদ্যুৎ খাতে খুব খারাপ অবস্থা থেকে আজকের এ অবস্থানে উঠে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ খাতে আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করবো।”
    \”Skills for Employment Investment Program (SELP) (Phase-1)\” শীর্ষক ১ হাজার ৫০ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার অপর একটি প্রকল্প একনেক সভায় পাস হয়। মোট অর্থের মধ্যে জিওবি খাত থেকে ২১৭ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ৮৩৩ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। সাহায্যকৃত এ টাকার মধ্যে সুইস এজেন্সী ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ৫৩ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা অনুদান হিসেবে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৭ শ ৮০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেবে। এ প্রকল্পের আওতায় তৈরী পোশাক, নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, চামড়া এবং জাহাজ নির্মাণ এই ৬টি খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে ৪৭ হাজার ৪শ জন এবং বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৬শ সহ সর্বমোট ২ লক্ষ ৬০ হাজার জনকে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান ও ১ লক্ষ ৮২ হাজার জনের কর্মসংস্থান তৈরী করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সারাদেশে এ প্রকল্পটি জুলাই, ২০১৪ থেকে ডিসেম্বর, ২০১৭ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে। আজকের প্রেস ব্রিফিং-এ পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আমাদের জনশক্তিকে সত্যিকারভাবে জনসম্পদে পরিণত করার জন্যে সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহায়তায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষিত করা হবে। যত দ্রত আমরা কারিগরি শিক্ষাসহ সময়োপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারব তত দ্রুতই আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।” প্রেস ব্রিফিং-এ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, “এ প্রকল্পটি অর্থ মন্ত্রণালয় মনিটরিং ও মূল্যায়ন করবে। মূল্যায়ন শেষে অর্থ ছাড় দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।”
    “বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন (সংশোধিত)” নামক আরও একটি সংশোধিত প্রকল্প আজ একনেকে পাস হয়। ৮৮ কোটি টাকায় এ প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নেভাল আর্কিটেকচার এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিটিতে ৬০ জন করে মোট ১৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যুগোপযোগী শিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে। উন্নত দেশগুলোতে দক্ষ জনবলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ প্রতিষ্ঠান হতে প্রশিক্ষিত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ¯œাতক প্রকৌশলীরা উন্নত দেশগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং এতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।
    আজকের সভায় ১শ ১৮ কোটি ৬২ লক্ষ টাকার “সদর দপ্তর ও জেলা কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শক্তিশালীকরণ” নামক প্রকল্পটি পাস হয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর জানুয়ারি, ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৬ মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
    প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
    সভাশেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘একনেক’ পাস হওয়া ৪টি প্রকল্প নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিং-এ মিলিত হন।খবর বাসস