একটি সেতুর অভাবে ৪লাখ মানুষের চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি

    0
    307

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩জানুয়ারী,আলী হোসেন রাজনঃ রাজনগর-বালাগঞ্জ রাস্তার খেয়াঘাট বাজারে কুশিয়ারা নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে দুটি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষ যুগ-যুগ ধরে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। সেতু না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা যোগে ৩টি ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।

    রাজনগর-বালাগঞ্জ রাস্তার খেয়াঘাট বাজারে কুশিয়ারা নদীর ওপর একটি সেতুর জন্য স্থানীয় মানুষ বছরের পর বছর আন্দোলন করলেও এতে ফল হচ্ছে না। অবহেলিত এ অ লের লোকজনের দাবি, কুশিয়ারা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলে শুধু রাজনগর-বালাগঞ্জ নয়, পার্শ্ববর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ ও ওসমানীনগর থানার মানুষও উপকৃত হবে।

    এসব ঞ্চলের মানুষ সিলেট, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অ লের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের পাশাপাশি শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা পাবে। জেলার মৎস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত কাওয়াদিঘি হাওরের মৎসজীবিরা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে সহজে মাছ পরিবহন করতে পারবে। স্থানীয়রা জানান, কুশিয়ারা নদীর দক্ষিণ পাশে রাজনগর উপজেলা এবং উত্তর পাশে নদী পার হলেই সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা সদর।

    শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজের জন্য রাজনগর, বালাগঞ্জ ও ওসমানিনগর উপজেলার মানুষকে সিলেট ও মৌলভীবাজারে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে রাজনগর উপজেলার উত্তর পাশের ফতেহপুর, উত্তরভাগ, পাঁচগাঁও ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য রাজনগর উপজেলা বা মৌলভীবাজার জেলা সদরের চেয়ে বালাগঞ্জ এবং সিলেটের সঙ্গেই যাতায়াত সহজ। এতে তাদের অর্থ ও সময় দুটোই বাঁচে। কিন্তু সেখানে একটি সেতু না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পেশাজীবি মানুষ নৌকা দিয়ে কুশিয়ারা পার হয়ে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন।

    এছাড়া স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও রোগীসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বেড়ে গেলে তীব্র স্রোতে খেয়ানৌকায় পারাপার আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তখন এ দুর্ভোগ আরও চরমে উঠে। বিভিন্ন সময় সেখানে নৌকাডুবির মতো মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সেতুর অভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় শিক্ষা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে এ এলাকার মানুষ দিনে-দিনে পিছিয়ে পড়ছে। খেয়াঘাট বাজার ও বিলবাড়ী ঘাটে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন এর প্রতিনিধি সরেজমিন গিয়ে দেখেন, ঘাটে ৬-৭টি ছোট নৌকা বাঁধা রয়েছে। একটিতে মহিলা ও শিশুসহ ১৪-১৫ জন লোক উঠেছে। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও নৌকা করে কয়েকটি মোটরসাইকেল পার করতে দেখা গেছে।

    স্থানীয় এলাকাবাসীরা দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন এর প্রতিনিধিকে জানায়, লেখাপড়া করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় করে কুশিয়ারা নদী পার হতে হয় শিক্ষার্থীরা । স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এখানে একটি সেতুর জন্য অনেকবার সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের কাছে ধর্না দিয়েছি। আন্দোলন, বিক্ষোভ, মানববন্ধন করেছি।

    ২০১৩ সালে এখানে একটি সেতু নির্মানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিদর্শনে এসেছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রকৌশলী অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা ও অধ্যাপক তারেকুল ইসলাম। তারা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য কুশিয়ারা তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছিলেন। এরপর ২ বছর কেটে গেলেও এখনো শুরু হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ।

    এ ব্যাপারে রাজনগর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রুবাইয়াত জামান বলেন, এই সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় রিপোর্ট একনেকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা যাবে।