একটি শিশুও যেন টিকাদান থেকে বাদ না পড়েঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    256

    আমারসিলেট24ডটকম,২৬জানুয়ারীঃ হাম-রুবেলার টিকাদান ক্যাম্পেইন ও ২১তম জাতীয় টিকা দিবসের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তিনি হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি শিশুও যেন হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে, সে বিষয়ে অভিভাবকদের সজাগ থাকতে হবে। অনানুষ্ঠানিকভাবে গতকাল শনিবার থেকে দেশজুড়ে হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা নিজের সন্তানকে টিকা দিন। আশপাশের সব শিশু যেন টিকা নেয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিন। বিশেষ করে দরিদ্র ও অবহেলিত শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে যাতে তাদেরকেও টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসা যায়। সবাই আন্তরিক হলে কেউ বাদ যাবে না। পাশাপাশি হতদরিদ্র পরিবারের শিশুরা যেন কোনোভাবেই বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কোলে একটি শিশু ছিলেন।তিনি বলেন  ‘আমি দাদি-নানি,তাই কোলে নিয়ে কাজে অসুবিধা হয় না, প্রধানমন্ত্রীর কোল থেকে কিছুতেই নামবে না শিশু সানজিদা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনই ভাষণ দেবেন। একটা শিশুকে কোলে নিয়ে কীভাবে বক্তব্য দেবেন তিনি? শিশুটিকে নামানোর জন্য যাঁরা তোড়জোড় করছিলেন, তাঁদের থামালেন প্রধানমন্ত্রী। হাসি মুখে বললেন , ‘আমি দাদি-নানি, কোলে নিয়ে কাজে অসুবিধা হয় না।’আজ রোববার সকাল নয়টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে এই দৃশ্যের অবতারণা। হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ছোটাছুটি চলছে। চলছিল নানা আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু তিন বছরের শিশু সানজিদার এসবের দিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল না। যেন অতি আপন কারও কোলে বেশ মজা পাচ্ছিল সে।শিশু টি কে কোলে রেখেই তিনি টিকাদান ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী ভাষণ দেন যা সকলের নজর কেড়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই প্রতিটি শিশু সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হয়ে গড়ে উঠুক। সেই লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবায় আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মত মানুষ হবে। রুবেলা প্রতিরোধ সর্ম্পকে তিনি বলেন, রুবেলার বিষয়ে খুব বেশি জানা ছিল না। একটু যত্ন নিলেই শিশুদের এ রোগ থেকে মুক্তি দেয়া যায়।
    বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশভুক্ত করতে নাগরিকদের সুস্থতা জরুরি। সে কারণে আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকে ৫০ শয্যা, ৫০ শয্যা হাসপাতালকে ১০০ শয্যা, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করেছে। ১৯৯৬-২০০১ সাল মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার সাড়ে চার হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিল, ১১ হাজার অবকাঠামো নির্মাণ করেছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সেগুলো বন্ধ করে দেয়। তিনি আবারও সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
    শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয়। তিনি আশা করেন, হাম-রুবেলা টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য অর্জিত হবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু কমিয়ে আনা, স্বাস্থ্য খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোসহ তাঁর সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেফায়েত উল্লাহ ছাড়াও বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
    প্রসঙ্গত, হাম ভাইরাসজনিক মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই রোগ সাধারণ একজন আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা অন্যদের মধ্যে হাঁচি ও কাঁশির মাধ্যমে ছড়ায়। শিশু ছাড়াও যে কোনো বয়সে হাম হতে পারে।