ইসলামের অপব্যাখ্যাকারীকে প্রতিরোধ করতে হবেঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    226

    “আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং ইসলামের ওপর যাদের বিশ্বাস রয়েছে, স্বার্থান্বেষী মহল তাদের মধ্যে দ্বিধা ও বিভাজন তৈরি করতে পারবে না।”শেখ হাসিনা

    আমারসিলেট24ডটকম,২২মার্চঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুন-খারাবি, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ ইসলামের শিক্ষা নয়। যারা এসব অপকর্ম করে তাদের কোন ধর্ম নেই, সীমানা নেই। ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী এ অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে।

    ইসলামকে শান্তির ধর্ম আখ্যায়িত করে ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যেন বোমাবাজি, সন্ত্রাসী, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, হাত-পায়ের রগ কেঁটে দেয়া, চোখ তুলে নেয়ার মত ধর্মবিরোধী কাজ করতে না পারে, এ জন্য তিনি আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন।
    শেখ হাসিনা বলেন, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িতদের কোন ধর্ম নেই, দেশ নেই, এরা গণতন্ত্রেও বিশ্বাসী নয়। তিনি বলেন, ধর্মের নামে স্বার্থান্বেষী মহল যেন আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন ও দ্বিধা তৈরি করতে না পারে, এ জন্যও আলেম-ওলেমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
    তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে আজ হানাহানি, মারামারি ও কাটাকাটি লেগে আছে। এসব সহিংস কাজ করে কারা ফায়দা লুটতে চাইছে, তা ভেবে দেখতে হবে।সম্প্রতি একই ঘটনা আমাদের দেশেও তা চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে ওই কুচক্রী মহলটি সফল হতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং ইসলামের ওপর যাদের বিশ্বাস রয়েছে, স্বার্থান্বেষী মহল তাদের মধ্যে দ্বিধা ও বিভাজন তৈরি করতে পারবে না।”
    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন ধর্ম সচিব চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসান এবং ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তৃতা করেন মহাপিরচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল আওয়ামী লীগের নাম শুনলেই ধর্ম গেল, গেল বলে অপপ্রচার চালায়। পাকিস্তান আমল থেকেই এমনটি হয়ে আসছে।
    তিনি বলেন, অথচ যারা নামাজ পড়ে না, মদ খায়, ঘুষ খায়, তাদের কাছে ইসলাম হেফাজতে থাকে কিভাবে? আর যারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, ধর্ম মানে, ইসলামী দর্শন মেনে চলে, তাদের কাছে ধর্ম নিরাপদ নয়, এটাই বা কেমন কথা? বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ধর্মের জন্য এতকিছু করার পরও আওয়ামী লীগের জন্য এটা দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়।
    তিনি বলেন, মা-বোনদের মাঝে যারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছে, মিথ্যা কথা বলছে, তারা কি ইসলাম ধর্ম মতে পাপ করছে না?
    তিনি আলেম-ওলামাদের উদ্দেশে আরো বলেন, এ অপপ্রচার সম্পর্কে মা-বোনদের কিভাবে বোঝানো যাবে, তাদের কিভাবে সচেতন করা যাবে, সে পথ খুঁেজ বের করতে হবে। আওয়ামী লীগ সব সময় এ অপপ্রচারের শিকার হচ্ছে, যা দুঃখজনক।
    শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যে নারী তার স্বামী-সন্তান হারিয়েছে, যে বাবা তার পুত্র হারিয়েছে, যে ভাই তার বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিতে দেখেছে, যে বোন তার ভাইকে হারিয়েছে, তারা আজ বিচার চায়।
    ভবিষ্যতে যেন কেউ আর এমন অন্যায় কাজ করতে না পারে সে জন্য তাঁর সরকার যুদ্ধাপরাধীদের সে বিচার করছে।
    তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গণহত্যা, মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল ইতোমধ্যে তাদের অনেকের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একজনের ফাঁসির রায়ও কার্যকর হয়েছে।
    অথচ এ যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বিএনপি-জামায়াত জোট হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতা, স্কুলগামী শিশুদের ওপর বোমা হামলা, হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারার মতো ঘৃণ্য কাজ করেছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজাকার, আলবদর, আলশামস শব্দগুলোর অর্থ বেশ চমৎকার, মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দিতে শব্দগুলো বেশ কার্যকরী। কিন্তু এ শব্দগুলো আজ গালিতে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্মের নামে এ শব্দগুলো ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে। ফলে এ শব্দগুলো শুনলে এখনও মানুষের মনে আতংক এসে যায়।
    তিনি বলেন, বিশ্বের সকল ধর্মের মধ্যে একমাত্র ইসলামই নারীদের পূর্ণ অধিকার দিয়েছে, একটি সামগ্রিক জীবনদর্শন দিয়েছে। কিন্তু পবিত্র ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামবিরোধী যুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অমুসলিম বলে প্রচারণা চালিয়েছে। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন চালিয়েছে। আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করেছে মানুষের বসতবাড়ি। যা ছিল সম্পূর্ণভাবে ইসলামী আদর্শের পরিপন্থী। মানবতার পরিপন্থী।
    তিনি বলেন, ধর্মতো আমাদের এ শিক্ষা দেয় না। যারা এ কাজ করেছে তারা প্রকৃত মুসলমান নয়। কারণ ইসলাম শান্তি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতিৃত্বের ধর্ম।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় আদর্শে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের আজকের দিনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মের প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধু তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ইসলামের খেদমতে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করেন। জাতীয় পর্যায়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদ্যাপনের জন্য সীরাত মজলিস গঠন করেন।
    বঙ্গবন্ধু বেতার ও টেলিভিশনে প্রতিদিনের অনুষ্ঠান শুরু ও সমাপ্তিতে কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শবে কদর ও শবে বরাতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বিশ্ব এজতেমার জন্য টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে বিশাল জায়গা বরাদ্দ দেন। কাকরাইল মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য জমি বরাদ্দ করেন। তিনি আইন করে মদ, জুয়া, হাউজি ও অসামাজিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করেন।
    জাতির পিতা আলেম-ওলামাগণের নেতৃত্বে একাধিক ধর্মীয় প্রতিনিধিদল সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করেন। বাংলাদেশকে ওআইসি’র সদস্য করেন।
    তিনি বলেন, কম পয়সায় যাতে সমুদ্রপথে মানুষ হজ্জ করতে পারেন এ জন্য বঙ্গবন্ধু ‘হিজবুল বাহার’ নামে একটি জাহাজ ক্রয় করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে হজ্জযাত্রীদের জন্য আনা ওই জাহাজটিকে প্রমোদতরীতে পরিণত করেন। মদ ও জুয়ার অবাধ লাইসেন্স প্রদান করেন। পরবর্তীতে তার পুত্রও ওই জাহাজটিকে প্রমোদতরী হিসেবে ব্যবহার করেছে।
    তিনি বলেন, আমার জিজ্ঞাসা, যারা মদের লাইসেন্স দিয়েছে, জুয়ার লাইসেন্স দিয়েছে, তাদের কাছে ধর্ম কিভাবে হেফাজতে থাকে?
    শেখ হাসিনা বলেন, গত ৫ বছরে আমরা ইসলামের মর্মবাণী যথাযথভাবে তুলে ধরার আন্তরিক চেষ্টা করেছি। সব ধর্মের হেফাজত এবং প্রচার ও প্রসারে আমাদের সরকার এখনও কাজ করে চলেছে। মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) মদিনা সনদে যে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, সে অনুযায়ী দেশ চলছে ও চলবে। তবে কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক কোন আইন করা হবে না। আবার আমাদের সরকার কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন কাজও করবে না।
    তিনি বলেন, ইসলাম শান্তি, সৌহার্দ্য, অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও মানবতার ধর্ম। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ধর্মের মৌলিক ভিত্তিগুলোকে ধারণ করে গরীব ও অনাথদের জন্য সব সময় কাজ করে চলেছে। কিন্তু যারা নামাজ পড়ে না, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত, সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ উপার্জন করে তারা কিভাবে ইসলামের রক্ষক হয়?
    তিনি বলেন, আমরা ইসলামের বিধান মেনে চলার চেষ্টা করি। ধর্মান্ধতা নয়, ধর্মপরায়ণতায় বিশ্বাস করি। ইসলামের খেদমতে আমরা বিশ্বাস ও অনুভূতি থেকেই কাজ করি। তাই ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪৩টি জেলা কার্যালয় ও এর সকল জনশক্তিকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করেছি। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কল্যাণের জন্য ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করেছি। এ ট্রাস্টের মূলধন এখন ২৮ কোটি টাকার উপরে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পে ৪০ হাজার আলেম-ওলামার কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের ৪০ লাখ শিশুকে মসজিদমুখী করা হয়েছে এবং প্রাক-প্রাথমিক স্তরে তারা শিক্ষা লাভ করছে।
    আমাদের সরকার আরবী-বাংলা-ইংরেজি অনুবাদ ও উচ্চারণসহ পবিত্র আল কোরআন এর ডিজিটাল ভার্সন চালু করেছে। আরবী বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে।
    তিনি বলেন, আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বায়তুল মুকাররম মসজিদের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের জন্য একটি মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করি। পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে সে কাজ বন্ধ করে দেয়। গত মেয়াদে আমরা পুনরায় মসজিদ সম্প্রসারণ ও মিনার তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছি।
    তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকতে বায়তুল মোকাররমের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। গতবছর আন্দোলনের নামে তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদে আগুন দিয়েছিল, মসজিদের সামনের রাস্তায় গরীব হকারদের হাজার হাজার কোরআন শরীফ ও হাদিসের বই পুড়িয়ে দিয়েছিল। এসব গরীব হকারদের আমরা সাহায্য সহযোগিতা দিয়েছি। অথচ বিএনপি-জামায়াত ইসলামের হেফাজতকারী বলে দাবি করে, যা দুঃখজনক।
    শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করেছি। ধর্মীয় বিষয়সহ আর্থ-সামাজিক নানা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার ইমামকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইসলাম’ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আমরা ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমীর সিলেবাসে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ যুক্ত করেছি। ৭ হাজার ইমামকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
    তিনি বলেন, আমাদের সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ১ হাজার মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন তৈরি করেছে। ৮০টি মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করেছে। প্রথমবারের মতো ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষা সমাপনীতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান কর্মসূচি চালু করেছে। এ বছর ইবতেদায়ী উত্তীর্ণ ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি এবং ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সাধারণ বৃত্তি দেয়া হয়েছে।
    তিনি বলেন, কিন্তু যারা কথায় কথায় ইসলামের স্লোগান দেয়, তারা ইসলামের খেদমতে কতটা কি করেছে, তা দেশবাসীই বিচার করে দেখবেন।
    তিনি বলেন, ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে যুগোপযোগী আধুনিত শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। পার্থিব শিক্ষার সঙ্গে যখন একজন শিশু ধর্মীয় শিক্ষাও লাভ করে, তখনই সে পরিপূর্ণ শিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে। মাদকসহ সব ধরনের অপকর্ম থেকে সে নিজেকে দূরে রাখতে সক্ষম হবে। সে লক্ষ্যেই ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
    তিনি বলেন, কওমি মাদ্রাসার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। ওই কমিটি দ্রুত একটি আধুনিক কারিকুলাম তৈরি করে দেবে। এতে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সনদ লাভে সক্ষম হবে। এতে তারা চাকরি করে জীবিকা নিরবাহ করতে পারবে।
    তিনি বলেন, তাঁর সরকার বয়স্ক ও বিধবা ভাতা চালু করেছে। এখন আর অল্প বয়সী বিধবাদের পরিবারের গলগ্রহ হয়ে থাকতে হচ্ছে না বা পতিতা পল্লীতেও আশ্রয় নিতে হচ্ছে না। এসব বিধবারা যেন আভ্রু নিয়ে থাকতে পারে, এটাইতো আমাদের সরকার বা আওয়ামী লীগের ইসলামী শিক্ষা। কিন্তু ইসলামের রক্ষক হিসেবে দাবিদার বিএনপি-জামায়াতকে তো এসব উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, হজ্জ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার জন্য আমাদের সরকার সৌদি সরকারের প্রশংসাপত্র পেয়েছে। হজ্জ ব্যবস্থাপনায় আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থান অধিকার করেছি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে হাজীদের বাড়ী ভাড়ার অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। সে সময় সরকারি যাকাত ফান্ডের অর্থও আত্মসাৎ করা হয়।
    তিনি বলেন, সুষ্ঠু হজ্জ ব্যবস্থাপনার জন্য হজ্জ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। হজ্জের সার্বিক কার্যক্রম ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় আনা হয়েছে। হাজীদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ২০১১ সাল থেকে জেদ্দা হজ্জ টার্মিনালে একটি প্লাজা ভাড়া নেয়া হয়েছে। আশকোনায় হজ্জ অফিসে হাজীগণের সুবিধার্থে সেন্ট্রাল এসি ও লিফ্ট স্থাপন করা হয়েছে। এতে প্রতিবছর হাজীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
    তিনি অশ্র“সিক্ত কণ্ঠে বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল ইসলামের কথা বলে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। এমনকি শিশু রাসেলকেও তারা রেহাই দেয়নি। কারবালার ট্র্যাজেডির চেয়ে কম নয়Ñ আমার পরিবারের হত্যার কাহিনী। কারবালা ট্র্যাজেডিতে কোন শিশুকে হত্যা করা হয়নি। কি অপরাধ করেছিল আমরা ভাইয়ের বউয়েরা? কিন্তু যারা এ নৃশংস হত্যাযজ্ঞ করেছে, তারা তো পরবর্তীতে দেশের উন্নয়নে ও ইসলামের হেফাজতে কিছুই করেনি।
    তিনি বলেন, তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শানিত হয়ে দেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিময়, নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়তে হলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন বা তাঁর দেখানো পথেই এগিয়ে যেতে হবে। আর আমাদের সরকার সে অনুযায়ী কাজ করে চলেছে।খবরঃবাসস।