ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দেখিয়ে প্রধান শিক্ষককে জেল-জরিমানা:সর্বত্র ক্ষোভ

    0
    201

    আমারসিলেট24ডটকম,২৫এপ্রিল,আমিনুল ইসলাম হিরন: ছাতকে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউএনও কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অন্যায়ভাবে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদানের ঘটনায় উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও উপজেলার সচেতনমহলে ক্ষোভ আর অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গত রোববার উপজেলার পীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা সিদ্দিকা পান্নার কথিত একটি অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক মারফত আলীকে ৪মাসের কারাদন্ড ও ১০হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন ইউএনও আইনুর আক্তার পান্না।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার সৈদেরগাও ইউনিয়নের পীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা ও দিরাই উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের মৃত আব্দুন নুরের কন্যা মাহমুদা সিদ্দিকা পান্নার প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার নিজ বাড়ি দিরাইয়ের ফ্রান্স প্রবাসী তাজুল ইসলাম আফসরের সাথে। স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা সিদ্দিকা পান্নার প্রেমিক ফ্রান্স প্রবাসী তাজুল ইসলাম আফসর প্রেমিকা কর্তৃক প্রতারিত হওয়ায় প্রতিকার চেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের কিছু ছবি ও পান্নার হাতের লেখা চিঠি, বিভিন্ন সময়ে পান্নাকে প্রেরিত অর্থের রশিদসহ ডকুমেন্ট প্রেরণ করেন। চিঠি পেয়ে ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকদের সামনে ওই চিঠির মুখ খুললে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা সিদ্দিকা পান্না। তিনি প্রধান শিক্ষক মারফত আলীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেন পান্না। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১২ এপ্রিল শনিবার স্কুলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাবর। তদন্তে প্রধান শিক্ষক মারফত আলীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৩ এপ্রিল রোববার সকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাবর, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিছবাউজ্জামান শিলুর উপস্থিতিতে চিঠির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’শিক্ষকের মধ্যে সৃষ্ট ভুল বুঝাবুঝির ঘটনাটি আপোষে নিস্পত্তি করা হয়। এর কিছুক্ষন পর প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে সহকারি শিক্ষিকা পান্না প্রধান শিক্ষক মারফত আলীর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবরে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর কোন প্রমাণ ছাড়াই ইউএনও আইনুর আক্তার পান্না প্রধান শিক্ষক মারফত আলীকে ডেকে নিয়ে শিক্ষিকা পান্নাকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দেখিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৪মাসের কারাদন্ড ও ১০হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। শিক্ষা বিভাগের সংশি¬ষ্ট বিষয়টি কোন প্রকার তদন্ত ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন ছাড়াই প্রধান শিক্ষক মারফত আলীকে জেল-জরিমানা করার ঘটনায় হতবাক হয়ে যান উপজেলার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সচেতন মহল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার বিভিন্ন প্রধান শিক্ষকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, সম্প্রতি খরিদিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুর রহমান একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার জেমীকে অফিস কক্ষে যৌন নির্যাতন করেন। কিন্তু তাহমিনা আক্তার জেমীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরও আজ পর্যন্ত এ ঘটনার কোন বিচার হয়নি। এ বিষয়টি উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও রহস্যজনক কারনে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন ইউএনও ও শিক্ষা কর্মকর্তা। কিন্তু ১৩ এপ্রিল একটি তুচ্ছ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও আইনুর আক্তার পান্না তড়িগড়ি করে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে একজন প্রধান শিক্ষককে ৪মাসের সাজা ও ১০হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।