আসন্ন বাজেটে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের বাজেট দাবি সাংসদদের

    0
    401

    ঢাকা, ২৯ এপ্রিল : বিদ্যুৎ দেওয়া হবে, স্কুল-কলেজের এমপিও হবে, রাস্তাঘাট ঠিক হবে—এসব প্রতিশ্রুতির কারণেই মহাজোটকে ভোট দিয়েছে জনগণ। সামনে নির্বাচন। কাজেই আসন্ন বাজেটে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
    সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রীর কাছে গতকাল রোববার এই অভিযোগ ও দাবি করলেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানরা। অর্থসচিব ফজলে কবীর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
    তবে সাংসদদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতে কোনো সমস্যা হবে না। ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত যা করার এই সরকার করে যাচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে উল্লেখ করে মুহিত জানান, আমাদের ব্যর্থতা যে ১৫ লাখ শিশু এখনো পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না।
    অর্থমন্ত্রী বলেন, ২৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯ থেকে ২০ হাজারের এমপিও আছে। নতুন এমপিও করতে গেলে অনেক অর্থের দরকার।
    অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু দেওয়া হলে চাহিদা হয়ে যায় গগনচুম্বী। এটাই হলো মুশকিল যে, বেশি দিলে শুতে চায়। মন্ত্রণালয়গুলোর বড় অঙ্কের বাজেট করার প্রবণতাও একটা সমস্যা বলে তিনি মনে করেন।
    ভূমি মন্ত্রণালয়বিষয়ক স্থায়ী কমিটির আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপিও নিয়ে অর্থমন্ত্রীর মনোভাবের প্রতিবাদ করে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ এমপিওর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি। পূরণ হচ্ছে না। অর্থমন্ত্রী এভাবে কথা বললে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
    তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, এমপিও হঠাৎ বন্ধ করলে হবে না। এটা ফাজলামির বিষয় না, নির্বাচনের বিষয়।
    মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, মানুষ রাস্তাঘাটটাই বেশি দেখে। সামনে নির্বাচন। অথচ অনেক জায়গায় অর্ধেক কাজ করে ঠিকাদাররা বসে আছেন।
    দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তির বিরাট অংশ তৈরি পোশাকশিল্প খাতের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লেখ করে মেহের আফরোজ বলেন, একটি বিশেষ ব্যুরো গঠন করা জরুরি।
    মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দাওয়াত দিয়েও অনেক জায়গায় ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ঠিকাদাররা নিশ্চিত নন সরকারের কাছে টাকা আছে কি না।
    সাভারের রানা প্লাজা নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতিই মূল কারণ। দুর্নীতির কারণেই চারতলা ভবনে অনুমোদন ছাড়া আটতলা হয়েছে। নির্মাণ কাজে দেশের সব জায়গায় একই অবস্থা চলছে।
    বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভুঁইয়া, গণপূর্তবিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, শ্রম মন্ত্রণালয়বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইস্রাফিল আলম প্রমুখ।
    এর আগে গতকাল দুপুরে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সমিতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত আরেক প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী সাভারের রানা প্লাজার মালিককে দুর্বৃত্ত বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, আগে তো অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ হতো। এটা আর হতে দেওয়া যাবে না।
    টেলিভিশনে ছবি দেখানোর ব্যাপারে শৃঙ্খলা আনার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।