আশ্রয় পাওয়া ৭ হাজার অভিবাসীর ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি

    0
    224

    “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমুদ্রে আটকে পড়া অভিবাসীদের জীবন রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে উল্লেখ করে সকল দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩মে: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সাগরে ভাসমান অথবা বিভিন্ন দেশে আশ্রয় পাওয়া প্রায় সাত হাজার অভিবাসীর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়া বিশপ।

    স্থানীয় সময় (শুক্রবার) দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

    জুলিয়া বিশপ বলেন, “ইন্দোনেশিয়া মনে করছে, সমুদ্রপথে অবৈধভাবে পাড়ি দেয়া সাত হাজার অভিবাসীর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী, বাকিরা বাংলাদেশি।”

    বিশপ আরো বলেন,“তারা বলেছে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে গেছে। সেখানে বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিশে মূলত চাকরির উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছে।”

    অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ইন্দোনেশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিভাগের মহাপরিচালক হাসান ক্লিব তাকে জানিয়েছেন-দেশটিতে একটি নৌযানে ৬০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়। এদের ৪০০ জনই বাংলাদেশি ছিল।

    গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত তিন হাজার অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড। আরো বহু মানুষ নৌযানে সাগরে ভাসছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

    এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গা এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সাধারণ সম্পাদক জনাব জমির উদ্দিন বলেন, দু’-তিন দিন আগে মিয়ানমার বাহিনী তাদের সমুদ্র সীমায় একটি নৌকা থেকে সাড়ে তিনশ’ যাত্রী উদ্ধার করে। এদের মধ্যে ২০৮ জন বাংলাদেশিকে সেখানে জাতিসংঘের আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই দেয়া হলেও বাকী ১৪২ জন রোহিঙ্গাকে কি করা হয়েছে তার খোঁজ নেই।

    তিনি  আশঙ্কা করছেন, উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সরকার গুম করে বা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে ফেলতে পারে। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য মিয়ানমারে  অবস্থিত জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনের অফিসকে  অনুরোধ করেন।

    এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমুদ্রে আটকে পড়া অভিবাসীদের জীবন রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে উল্লেখ করে সকল দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।

    শনিবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে সফরের সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন,‘যখন লোকজন সমুদ্রে ভাসছে, তখন তাদের খুঁজে বের করে উদ্ধার করা এবং জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা দেয়াই হবে বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

    জাতিসংঘ মহাসচিব আশা করছেন, চলতি মাসের শেষের দিকে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় অভিবাসী সংকটবিষয়ক সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে সমুদ্রে পাড়ি দেয়ার মূল কারণগুলো খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    গত কয়েক সপ্তাহে সমুদ্রে পথে তিন হাজারের বেশি অভিবাসী ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়। এখনো অনেকে সমুদ্রে আটকা পড়া আছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা।

    জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংস্থা এবং পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের চাপে পড়ে ৭,০০০ অভিবাসীকে সাময়িক আশ্রয় দেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।ইরনা