আবুধাবি সাসটেইনেবিলিটি উইক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

    0
    254

    ‘আবুধাবি সাসটেইনেবিলিটি উইক’ ও ‘জায়েদ সাসটেইনেবিলিটি প্রাইজ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকাল ১১টায় আবুধাবি ন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টারের (এডিএনইসি) আইসিসি হলে আবুধাবি সাসটেইনেবিলিটি উইক-২০২০ (এডিএসডব্লিউ) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। খবর বাসসের।

    আট দিনব্যাপী এ সাসটেইনেবিলিটি সমাবেশ এডিএসডব্লিউ-২০২০ অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশের নীতি নির্ধারক, শিল্প বিশেষজ্ঞ, অগ্রণী প্রযুক্তিবিদ ও পরবর্তী প্রজন্মের সাসটেইনেবিলিটি নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ১১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সম্মেলন চলবে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদর্শনী কেন্দ্রে পৌঁছালে আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল-নাহিয়ান তাকে স্বাগত জানান। এ বছর পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন দেশের ১০টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে জায়েদ সাসটেইনেবল প্রাইজ প্রদান করা হয়।

    অনুষ্ঠানে শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল-নাহিয়ান ও শেখ হাসিনা ছাড়াও আরো সাতটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিরিবাতির ইউতান তারাওয়া ইয়েতা জুনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের প্রতিনিধির হাতে পুরষ্কার তুলে দেন। স্কুলটি গ্লোবাল হাইস্কুল ক্যাটাগরিতে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরষ্কার পেয়েছে।

    অনুষ্ঠানে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদো, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে, ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া রোরেকে বেইনিমারামা, সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যানা ব্রনাবিক, আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকিসিয়ান ও সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বিও অংশ নেন।

    এ বছর একই ক্যাটাগরিতে পুরষ্কারপ্রাপ্ত আরো পাঁচটি স্কুল হচ্ছে- কলম্বিয়ার এয়ার বাতাল্লা, নাইজেরিয়ার হাকিমি আলিয়ু ডে সেকেন্ডারি, মরক্কোর আল আমল জুনিয়র হাইস্কুল, ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মোস্টার ও নেপালের ব্লুম নেপাল স্কুল

    অপর চারটি ক্যাটাগরির আওতায় সুইডেনের জিএলওবিএইচই স্বাস্থ্য ক্যাটাগরিতে, খাদ্যে ঘানার ওকুয়াফো ফাউন্ডেশন, জ্বালানিতে ফ্রান্সের ইলেক্ট্রিসিয়ান্স উইথআউট বর্ডার্স এবং পানি ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেরেস ইম্যাজিং পুরস্কার লাভ করে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

    এ বছর এডিএসডব্লিউ-এর প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স,কম্যুনিটি অ্যান্ড ইয়ুথ’। এর ৬টি প্রধান স্তম্ভ হচ্ছে- জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানি ও খাদ্য, চলাচলের ভবিষ্যৎ, মহাকাশ, স্বাস্থ্যে বায়োটেকনোলজি ও কল্যাণের জন্য প্রযুক্তি।

    এডিএসডব্লিউ-২০২০ এর বৈশিষ্টের ৬টি স্তরের সঙ্গে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও ইউএই ভিশন-২০২১ এর মিল রয়েছে। গ্লোবাল সাসটেইনিবিলিটি অ্যান্ড হিউমেনিটারিয়ানিজম-এর অন্যতম অগ্রসেনানী ইউএই’র স্থপতি মরহুম শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ স্বীকৃতি হচ্ছে ২০০৮ সালে চালু করা হয় ‘জায়েদ সাসটেইনিবিলিটি প্রাইজ’। এই পুরস্কার ওইসব প্রতিষ্ঠান ও হাইস্কুলকে স্বীকৃতি দেয় ও পুরস্কৃত করে যেগুলো কার্যকরভাবে পরিচালিত, উদ্ভাবনীমূলক ও টেকসই সমাধানে প্রেরণা প্রদান করে। ৫টি ক্যাটাগরির পুরস্কার হচ্ছে- স্বাস্থ্য, খাদ্য, জ্বালানি, পানি, গ্লোবাল হাইস্কুল।

    গত ১১ বছরে এই পুরস্কার ৭৬ বিজয়ীসহ ৩১ কোটি ৮০ লাখ লোককে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে। এটি সারা বিশ্বের মানুষকে টেকসই সমাধান ও প্রযুক্তি গ্রহণের প্রতি আকৃষ্ট করেছে। প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসে আবুধাবি সাসটেইনিবিলিটি উইক চলাকালে এই বার্ষিক পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান হয়।

    শেখ হাসিনা তিন দিনের সরকারি সফরে রোববার রাতে আবুধাবি পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী সোমবার সন্ধ্যায় বাহরাইন, ইরান, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও ইউএইতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর হোটেলে রাষ্ট্রদূতদের এক সম্মেলনে যোগ দেবেন। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের মধ্যপ্রচ্যের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে কিভাবে আরো বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ইউএই’র প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহান্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহান্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান এবং ইউএই’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রেসিডেন্টের পত্নী শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারক আল কেতবির সঙ্গেও দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী এডিএনইসি’র হল-১১ এ আয়োজিত ‘দ্য ক্রিটিক্যাল রোল অব উইমেন ইন ডেলিভারিং ক্লাইমেট এ্যাকশন’ সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার আধিবেশনে যোগ দেবেন। এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের গৃহীত উদ্যোগের ব্যাপারে বিশ্ব নেতাদের অবহিত করার সুযোগ নিতে পারেন।

    প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে দেশে ফিরবেন।