আফ্রিকাকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে ম্যাচ জিতেছে নিউজিল্যান্ড

    0
    228

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৪মার্চঃ এমনই হওয়া উচিত ছিল সেমিফাইনাল ম্যাচের খেলা। অকল্যান্ডে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচটি দুলছিল পেন্ডুলামের মতো। যে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে ম্যাচ জিতে গেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে কিউইরা। ইডেন পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ডিএল মেথডে ৪ উইকেটে পরাজিত করেছে নিউজিল্যান্ড। ডেল স্টেইনকে ছক্কা মেরে কিউইদের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল নিশ্চিত করেন গ্র্যান্ট এলিয়ট। প্রোটিয়াদের আশ্রয় হলো পুরনো ‘চোকার্স’অপবাদই।

    প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে ২৮১ রান করে। কিন্তু বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ডের টার্গেট দাঁড়ায় ৪৩ ওভারে ২৯৮ রান। ১ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ২৯৯ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড। এলিয়ট ম্যাচ সেরা হন।স্বাগতিকদের শুরুটা অবশ্য ছিল উড়ন্ত। ডেল স্টেইন, মরকেল, ফিল্যান্ডারদের পিটিয়ে চাতু বানিয়েছেন ম্যাককালাম। তার ব্যাটে ৬ ওভারেই বিনা উইকেটে ৭১ রান তোলে কিউইরা।  নাথান অ্যাস্টলের পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে তিন হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি। ২২ বলে ৩১তম হাফ সেঞ্চুরি করেন ম্যাককালাম।

    সপ্তম ওভারে প্রোটিয়াদের ম্যাচে ফেরান মরনে মরকেল। তার প্রথম বলেই পুল করতে গিয়ে ম্যাককালাম ক্যাচ দেন স্টেইনের হাতে। শেষ হয় ২৬ বলে ম্যাককালামের ৫৯ রানের (৮ চার, ২ ছয়) বিধ্বংসী ইনিংস। কেন উইলিয়ামসনকেও (৬) বোল্ড করেন মরকেল। গাপটিল রান আউট হন ৩৪ রান করে। দলীয় ১৪৯ রানে রস টেলর আউট হলে চতুর্থ উইকেট হারায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। টেলর ৩০ রান করেন।

    পঞ্চম উইকেটে গ্র্যান্ট এলিয়ট ও কোরি অ্যান্ডারসন হতাশ করেন প্রোটিয়াদের। হাফ সেঞ্চুরিও করেন দুজনেই। তাদের জুটি থামে ১০৩ রান যোগ করে। চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি করা কোরি অ্যান্ডারসনকে ফেরান মরকেল। অ্যান্ডারসন ৫৭ বলে ৫৮ রান (৬ চার, ২ ছয়) করেন। এলিয়ট তোলে নেন ৮ম হাফ সেঞ্চুরি। থিতু হতে পারেননি রনকি। তবে এলিয়ট ছিলেন অনড়।

    ভেট্টোরিকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন এলিয়ট। ১৮ বলে ২৯, ১২ বলে ২৩ রানের সমীকরণটা সহজ করে আনেন তিনি। ৬ বলে ১২ রানের হিসেবটা ধরে রাখতে পারেননি স্টেইন। দুই বলে দুই রান দিলেও তৃতীয় বলে ভেট্টোরি চার মারেন। চতুর্থ বলে এক রান। পঞ্চম বলে এলিয়টের লং অন দিয়ে বিশাল ছয়। যা উড়িয়ে নিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বস্ব। গ্যালারিতে আছড়ে পড়ে ‘চোক’ প্রথা প্রতিষ্ঠিত হলো। এলিয়ট ৭৩ বলে অপরাজিত ৮৪ রান (৭ চার, ৩ ছয়) করেন। ভেট্টোরি অপরাজিত ৭ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মরকেল ৩টি করে উইকেট পান।

    এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রানেই দুই ওপেনার ডি কক (১৪) ও আমলার (১০) উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুজনই বোল্টের শিকার হন। ডু প্লেসিস ও রিলে রোসাউয়ের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় প্রোটিয়ারা। তারা ৮৩ রানের জুটি গড়েন। রোসাউকে ফিরিয়ে কিউইদের ম্যাচে ফেরান কোরি অ্যান্ডারসন। ৩৯ রান করে গাপটিলের হাতে ক্যাচ দেন রোসাউ।

    চতুর্থ উইকেটে ডু প্লেসিস ও অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে বড় স্কোরের ভিত পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের জুটি ১০২ রান পূর্ণ করতেই বৃষ্টি নামে ইডেন পার্কে। ঘন্টা দেড়েক বৃষ্টিতে বন্ধ থাকে ম্যাচ। বৃষ্টির আগে ৩৮ ওভার শেষে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২১৬ রান। বৃষ্টির পর ম্যাচ শুরু হতেই উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় বলেই ডু প্লেসিস কোরি অ্যান্ডারসনের শিকার হন। ১৫তম হাফ সেঞ্চুরি করা ডু প্লেসিস ১০৭ বলে ৮২ রান (৭ চার, ১ ছয়) করেন। ভেঙে যায় ডু প্লেসিস-ভিলিয়ার্সের ১০৩ রানের জুটি।

    বৃষ্টির পর পাঁচ ওভার খেলার সুযোগ পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে ব্যাট হাতে কিউইদের উপর তোপ দাগান ডেভিড মিলার। ১৮ বলে ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে আউট হন মিলার। তিনি ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকান। ৪৬তম হাফ সেঞ্চুরি করেন ডি ভিলিয়ার্স। ৪৫ বলে ৬৫ রান (৮ চার, ১ ছয়) করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে কোরি অ্যান্ডারসন ৩টি, বোল্ট ২টি করে উইকেট নেন।