আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক বহাল

    0
    192

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৮জানুয়ারীঃ বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চলছে চরম টানাপোড়েন৷ বিশেষ করে ঢাকা পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য করার পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে৷

    পাকিস্তান ওদিকে বাংলাদেশের কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে প্রত্যাহার করতে বলেছে কোনো কারণ ছাড়াই৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন,”পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি৷” তার কথায়, “মৌসুমী রাহমানকে প্রত্যাহারের কোনো কারণ দেখাতে পারেনি পাকিস্তান৷ এভাবে কূটনীতিক প্রত্যাহার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ভালো নয়।”
    এর আগে ২৩ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে প্রত্যাহার করা হয়৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে, তিনি জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত৷ এ কথা জানা যায় একজন আটক জঙ্গির জবানবন্দি থেকে৷ নিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কখনই কোনো ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিট ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলতে পারে -এমন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেব না এবং অতীতেও দেইনি৷”

    বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের এই আচরণ নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ এর আগে জাল টাকা ও মাদক ব্যবসা এবং বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের জন্য পাকিস্তানের দু’জন কূটনীতিককে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করা হয়৷ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান কখনোই বাংলাদেশবিরোধী অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি৷ বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতাদেও ফাঁসির ঘটনায় তারা তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত নেতাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান৷

    একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন,”আমরা অনেকদিন ধরেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছি৷ কারণ এই দেশটি বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান কখনোই ত্যাগ করেনি৷ তারা বাংলাদেশে এখন জঙ্গিবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ জাল টাকা, মাদক চোরাচালান-এ সবও করা হচ্ছে দূতাবাসের মাধ্যমে৷”

    তিনি বলেন,”পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না৷ তবে আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে সরকার সেটা করছে না৷ সম্পর্ক ছিন্ন করলে সার্ক, ওআইসি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ কিন্তু সেটা এখন আমাদের দেখার সময় নেই৷”

    তিনি আরো বলেন,”যতি সম্পর্ক রাখতেই হয়, তাহলে পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে৷ নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷ আমাদের পাওনা ফেরত দিতে হবে৷ এছাড়া পাকিস্তানি ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী সেনা সদস্যের বিচার করতে হবে৷”

    ওদিকে এরইমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ তবে এটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো প্রভাব ফেলছে না৷ তাই শাহরিয়ারর কবির মনে করেন,”সরকারকে এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” সুত্রঃডিডব্লিউ