আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা চলছে

    0
    442

    আমারসিলেট24ডটকম,০৪ফেব্রুয়ারীঃ আজ মঙ্গলবার বিদ্যার দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। “সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে” সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য দেবী সরস্বতীর অর্চনা করবেন। আজ সোমবার রাতেই রাজধানীসহ সারাদেশের মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। আজ সন্ধ্যায় আরতি ছাড়াও রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। পক্ষান্তরে এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নানা অনুষ্ঠান হাতে নিয়েছে।
    বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠেয় একটি অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রী পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। শ্রী পঞ্চমীর দিন ভোরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছাত্রছাত্রীদের গৃহ ও সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এ দিন শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথাও প্রচলিত। পূজার পরের দিনটি শীতলষষ্ঠী নামে পরিচিত। সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজার বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীনকালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন।
    আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজার প্রচলন হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রী পঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা যায়। এ পূজায় আমের মুকুল, দোয়াত-কলম, যবের শিষ, বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলসহ কয়েকটি বিশেষ সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। লোকাচার অনুসারে, ছাত্রছাত্রীরা পূজার পূর্বে উপবাস করেন। পূজার দিন কিছু লেখাও নিষিদ্ধ। যথাবিহিত পূজার পর লক্ষ্মী, নারায়ণ, লেখনী-মস্যাধার (দোয়াত-কলম), পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পূজা করার প্রথা প্রচলিত আছে। পূজান্তে পুষ্পাঞ্জলি দেয়ার প্রথাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের দল বেঁধে অঞ্জলি দিতে দেখা যায়।

    প্রধানমন্ত্রীর বাণী
    সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। তিনি বলেন, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আবহমানকাল ধরে এদেশের সকল মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন। তিনি আরো বলেন, তারা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালন করছেন। আমি বিশ্বাস করি পারস্পরিক এ সম্প্রীতি সামনের দিনগুলোতে আরও সুদৃঢ় হবে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন,হিন্দু সম্প্রদায়ের সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক দেবী সরস্বতী। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। তিনি দেবী সরস্বতীর পূজা-অর্চনা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানাই। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।