শ্রীমঙ্গলের কালাপুরে বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাৎ-বার্ষিকী আজ

    0
    317

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১ আগস্টঃ  শুরু হলো শোকাবহ আগস্ট মাস। আজ শনিবার শোকের মাস আগস্টের ১ম দিন। ৩১ জুলাই দিবাগত  মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে শোকের মাসের প্রথম প্রহরে আলোর মিছিলের মধ্যদিয়ে ৪০ দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা হয়েছে।  সাড়া দেশের সাথে আজকের দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুপুর ১২টায় টুঙ্গীপাড়াস্থ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন, দোয়া ও মোনাজাত।

    কৃষক লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠেয় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শোকের মাসে সাড়াদেশে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে।

    এদিকে এ দিনটিকে  পালন করতে শনিবার  বিকাল ৪ টায়  মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার  কালাপুরবাজারে স্থানীয়  আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের  উদ্যোগে   আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও শিরনী বিতরণের  আয়োজন করা হয়েছে।

    এতে প্রধান অথিতি থাকবেন  সাবেক চিফ  হুইপ  বর্তমান সাংসদ  আলহাজ্জ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহিদ।  বিশেষ  অথিতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন  উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি  এম,এ মনির, সাধারন সম্পাদক এম,এ  মান্নান সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

    অপর দিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। একইভাবে বাঙালির আত্মঘাতী চরিত্রের অপবাদেরও অবসান ঘটেছে। টেলিগ্রাফ পত্রিকার মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পত্রিকাটি সেদিন সুদূরপ্রসারী মন্তব্য করেছিল। দেশের মানুষ এখন অনুধাবন করতে পারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করে দেশে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী এবং দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।

    হানিফ বলেন, প্রতিবারের মত এবারও ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে আগস্টের প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর ৪০ দিনব্যাপি বিস্তারিত কর্মসূচি। এবার বঙ্গবন্ধুর ৪০ তম শাহদাৎবার্ষিকী হওয়ায় ৪০ দিনের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয় বলে জানান তিনি।
    উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।

    পৃথিবীর ইতিহাসে এই ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিনী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প।
    এর পর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল জাতির জনকের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এই ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী, আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
    বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানীর নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোন জঘন্য কাজ করতে পারে।

    ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ শ্রী চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।
    টাইমস অব লন্ডন এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় বলা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই।’

    একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকান্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।