আজ ফেলানী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ভারতে

    0
    231

    ঢাকা, ১৩ আগস্ট : আজ শুরু হয়েছে দীর্ঘ আড়াই বছর পর কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নির্মমভাবে নিহত ফেলানী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া অবশেষে । ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ দ্বারা গঠিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে এ বিচার শুরু হয়েছে ভারতের কোচবিহারের একটি বিশেষ আদালতে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানী নিহতের ঘটনার পরপরই বিজিবির পক্ষ থেকে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিএসএফের সাথে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। পতাকা বৈঠকের পরপরই ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিএসএফের নিকট কড়া প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়।
    এছাড়া বিজিবি সদর দপ্তর থেকে বিএসএফ সদর দপ্তরে কড়া প্রতিবাদলিপি পাঠানোর পাশাপাশি মৌখিকভাবেও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচারের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের সাথে অব্যাহত ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। বিজিবির অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ বিএসএফ সদর দপ্তর উক্ত ঘটনার তদন্তপূর্বক অপরাধীদের শাস্তি প্রদানের জন্য ‘জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্ট’ গঠন করেছে।
    গত মার্চে নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বিএসএফ মহাপরিচালকের কাছে ফেলানী হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যাপারে বিজিবি মহাপরিচালককে আশ্বস্ত প্রদান করেন।
    তারই ধারাবাহিকতায় বিএসএফ গঠিত আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশের ২ জন সাক্ষী, একজন আইনজীবী এবং বিজিবির একজন প্রতিনিধিকে ভারতে যাওয়ার জন্য বিএসএফের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়। উক্ত আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন প্রদান করেছে। সে অনুযায়ী বিজিবির একজন প্রতিনিধি (লেফটেনেন্ট কর্ণেল জিয়াউল হক খালেদ, অধিনায়ক, ৪৫ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, কুড়িগ্রাম), একজন আইনজীবী (আব্রাহাম লিংকন, পাবলিক প্রসিকিউটর, কুড়িগ্রাম) কোচবিহারে পাঠানো হয়। ।
    এছাড়া নিহত ফেলানীর বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম, নিহত ফেলানীর মামা মোঃ আব্দুল হানিফ বিএসএফের আদালতের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ১৯ আগস্ট ভারতের ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন, সোনারি, কোচবিহার পাঠানো হয়। । বিজিবির পক্ষ থেকে তাদের পাসপোর্ট, ভিসা ও যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ সকল প্রস্তুতি করা হয়েছে। ফেলানীর সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়া পূরণ হবে এবং এ বিচার মানবতার স্বাক্ষী হয়ে দুদেশের সম্পর্কোন্নয়নে জোরালো ভুমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়।
    ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী শুক্রবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর ঠোস অনন্তপুর সীমান্তে ভারতের আসাম রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার বংগাইগাঁও গ্রাম থেকে অবৈধ পথে ভারতের কোচবিহার জেলার খিতাবেরকুটির আন্তর্জাতিক পিলার নং ৯৪৭ এর সন্নিকট দিয়ে ভোরে কাঁটাতারের উপর মই দিয়ে বাবা নুরুল ইসলাম নুরুর সঙ্গে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ১৮১ বিএসএফ চৌধুরিরহাট বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই ফেলানী বুকের ডানদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নির্মম ভাবে নিহত হয়।