আজ পবিত্র লাইলাতুল মি’রাজ বা প্রিয় নবীর উর্ধ্বাকাশে গমন

    2
    919

    আমারসিলেট24ডটকম,২৬মেঃ নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মা বা’দ।পবিত্র লাইলাতুলমি‘রাজবা প্রিয় নবীর উর্ধ্বে গমন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা বনী ইসরাঈলের আয়াত নং 0১) এ মহান আল্লাহ জাল্লাশানুহু নিজেই দলীল বর্ননা করেছেন এবং বলেছেন:- سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِّنَ الْمَسْجِد الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ

    পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি প্রহরের বেলায় ভ্রমণকরিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-( আল্লাহ আরও বলেন)যার চার দিকে আমিপর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে( মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে) কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। সুবহানাল্লাহ !এটি এমন এক বিশ্ময়কর ঘটনা যার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্বয়ং আল্লাহ পাক রাব্বুলআলামীনও সুবহানা শব্দটি উল্লেখ করেছেন,মানব জাতির ইতিহাসে এটি একটি বিরলঘটনা যার গুরত্ব মানব ইতিহাসে তথা বিশেষ করে মুসলিম ইতিহাসে খুবই গুরত্বপূর্ণ ও গবেষণার বিষয়।সকল নবীও রাসুলআলাইহিসসালাতু ওয়াসসালাম গনের মুজেজার মাঝে আমাদের জানের জান প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম

    এর এই মু’জেজা মানব ইতিহাসেঅকল্পনীয় একটি অতি গুরুত্ব পুর্ন মুজেজা যার বর্ণনা বা আলোচনা করার সাহস ও ক্ষমতা আমার নেই ।স্বল্পজ্ঞানে সংক্ষেপে যতটুকু জ্ঞানে ধরেছে তা থেকে আলোচনা করার চেষ্টা করলাম ভুল হলে মহান আল্লাহ জাল্লাশানুহুর দরবারে ক্ষমা চাচ্ছি আশাকরি পাঠকরাও ক্ষমা করবেন ।মি’রাজ আরবি শব্দ, বাংলায় ওই শব্দের অর্থ উর্ধ্বে গমন বা উর্ধ্বাকাশে গমন,কেননা আল্লাহ্পাক জাল্লাশানুহু তার হাবীবসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম

    কে ঐ দিনেমহাকাশ হতে মহাকাশে ভ্রমন করিয়ে ছিলেন ।হাদিস শরীফে মিরাজ শব্দটি উল্লেখ করা হলেও কিন্তু আল্লাহ্পাক পবিত্র কুরআনুল করিমে ‘আসরা’ শব্দ উল্লেখ করেছেন, আর আরবিতে আসরা শব্দের বাংলা অর্থ সফর করা বা কাউকেরাতের বেলায় সফর করতে নিয়ে যাওয়া ,কেননা মিরাজ হয়েছিল রাতের বেলায় ।মিরাজের তারিখ নিয়ে একাধিক মতবাদ থাকলেও বেশিরভাগ গ্রহণযোগ্য মতবাদ হচ্ছে আল্লাহর নবীসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর নবুওতের দশম বছর উম্মুল মুমেনীন(সকল বিশ্বাসীদের মাতা) হযরত খাদিজাতুল কোবরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ইহ জগৎত্যাগ করার পরে এবং হিজরতের আগে যখন আরবের কাফির মূনাফিকরা মুসলমানদেরপ্রতি অত্যাচার অনাচার বাড়িয়ে দিলো তখনি আল্লাহ তার হাবীবসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে মি’রাজেএই সফর করিয়ে ছিলেন । হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনাতে দেখা যায় মক্কা মুয়াজ্জামা থেকেআল্লাহর হাবিবসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে জিব্রাইল আলাইহিসসালাতু ওয়াসসালাম

    বায়তুল মুক্কাদ্দাসে নিয়ে যান,সেখানে সমস্তআম্বিয়ায়েকেরামগনের সাথে ২রাকাত সালাতের ইমামতি করে ঊর্ধব গমনে চলে যান ।এভাবেপ্রথম, দ্বিতীয় ,তৃতীয় আসমান অতিক্রম করে বায়তুল মামুরে একত্ববাদের পরিচয়দান কারি নবী হজরত ইব্রাহীম আলাইহিসসালাতু ওয়াসসালাম এর সাথে সাক্ষাত হয় ।এর পর ‘ছিদ্রাতুল মুনতাহা’ থেকে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে -মহান রাব্বুল আলামীন তার কুদরতের সাক্ষাতে নিয়ে যান

    উল্লেখ্য,এখানে একটি বিষয় গবেষণার যোগ্য, যারা নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে নুর বা মাঠির তৈরি নিয়ে তর্ক বিতর্ক করে থাকেন তারা যেনএকটু চিন্তা করেন যে, যে নুরের জগতে হজরত জিব্রাইলআলাইহিসসালাতু ওয়াসসালাম যেতে পারেনি সেখানেকীভাবে সম্ভব হলো রাহমাতুল্লিল আলামীন সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর গমন? সেখান থেকে ফিরে আসার সময় উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য ৫ ওয়াক্ত সালাত(নামাজ) নিয়ে আসেন। সেখানে আল্লাহ তার নিদর্শন গুলো তার হাবীবসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামকে দেখিয়েছেন,যে গুলি একমাত্রআমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোন নবী রাসুল আলাইহিসসালাতু ওয়াসসালাম গনের দেখা সম্ভব হয়নি ।আগের নবী রাসুল আলাইহিসসালাতু ওয়াসসালামগন যে আল্লাহর কথা প্রচার করেছেন তার সমাপ্তি করেছেন শেষ নবীহজরত মুহাম্মদ মুস্তফাসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম।আল্লাহর আয়াত তথা নিদর্শনের একমাত্র সাক্ষী হলো আমাদের নবী রাহমাতুল্লিলআলামীন সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম। পবিত্র মিরাজের আরো বিস্তারিত জানার জন্য সূরা আন নাজাম আয়াতগুলি দেখুন এখানে আরো বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন – وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَى নক্ষত্রের কসম, যখন অস্তমিত হয়।مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىতোমাদের সংগী পথভ্রষ্ট হননি এবং বিপথগামীও হননি।وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىএবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىকোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়।عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىতাঁকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা, ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىসহজাত শক্তিসম্পন্ন, সে নিজ আকৃতিতে প্রকাশ পেল।وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَىউর্ধ্ব দিগন্তে, ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىঅতঃপর নিকটবর্তী হল ও ঝুলে গেল।فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىতখন দুই ধনুকের ব্যবধান ছিল অথবা আরও কম।فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَىতখন আল্লাহ তাঁর দাসের প্রতি যা প্রত্যাদেশ করবার, তা প্রত্যাদেশ করলেন।مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَىরসূলের অন্তর মিথ্যা বলেনি যা সে দেখেছে।أَفَتُمَارُونَهُ عَلَى مَا يَرَىতোমরা কি বিষয়ে বিতর্ক করবে যা সে দেখেছে? وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىনিশ্চয় সে তাকে আরেকবার দেখেছিল, عِندَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَىসিদরাতুলমুন্তাহার নিকটে, عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىযার কাছে অবস্থিত বসবাসের জান্নাত।إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىযখন বৃক্ষটি দ্বারা আচ্ছন্ন হওয়ার, তদ্দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল।مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىতাঁর দৃষ্টিবিভ্রম হয় নি এবং সীমালংঘনও করেনি।لَقَدْ رَأَى مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىনিশ্চয় সে তার পালনকর্তার মহান নিদর্শনাবলী অবলোকন করেছে।ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল তার মুসনাদে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে নকল করেন যে – قال رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم رأيت ربي عز و جل

    রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লামবলেন “আমি আমার মহিমান্বিত আল্লাহ জাল্লাশানুহকে দেখেছি “। আল্লাহ জাল্লাশানুহু আমাদের সকল কে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর কদম মুবারকে কোরবান হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন, সুম্মা আমিন বে হুরমাতে সায়্যদুল মুরসালিন।