আজ ও গাজীপুর ও সাভারে শ্রমিক অসন্তোষ

    0
    260

    আমারসিলেট 24ডটকম , ২৩সেপ্টেম্বর  : শ্রমিকদের দাবী ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকার ।এই মজুরির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে গাজীপুর ও এর আশপাশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক কার্যত যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব এলকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের উপর লাটিচার্জ, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ছে পুলিশ। এতে গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। একই কারণে সাভারে শ্রমিক-মালিকপক্ষ-পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৩০জন আহত হয়েছে বলে জানা যায় । উত্তপ্ত এলাকায় শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে,এবং  বেশিরভাগ কারখানা কর্তৃপক্ষ মূল ফটকে ছুটির নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
    আজ সকালে জেলার চৌরাস্তা, নাউজোর, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, বগুড়া বাইপাস, টেলিপাড়া, তিন সড়ক ও বোর্ড বাজার এলাকায় অবস্থিত গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচ্ছিন্নভাবে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।পুলিশ জানায়, শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকলে উভয় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এছাড়া  আজ সকালে কাপাসিয়ায় শ্রমিকরা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জনের মতো শ্রমিক আহত হয়েছেন। এরপরই এলাকার অর্ধশতাধিক গার্মেন্টস কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
    এদিকে ন্যায্য বেতনের দাবিতে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক-মালিক পক্ষ-পুলিশের ত্রিমুখি সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ সকাল ৮টা থেকে পৌর এলাকার ওলাইল মহল্লার স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের শ্রমিকরা ন্যায্য বেতনের দাবিতে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী প্রাইড গ্রুপ, এইচ আর টেক্সটাইল, ঝুমকা টেক্সটাইল, আল ইসলাম গার্মেন্টস, আন লিমা টেক্সটাইলসহ  অন্যান্য কারখানা লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের বের করে নিয়ে আসে। এসময় শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে ওই এলাকার ১০টি গার্মেন্টস ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।সকাল ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে।
    অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অপর একটি অংশ আল মুসলিম গ্রুপের কারখানায় হামলা চালায়। কারখানার বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায় তারা। তবে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিরোধের মুখে পড়লে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ও ঘটে। এরপর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক-মালিকপক্ষ-পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় কারখানাগুলোর সামনে পার্কিং করা ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং যান চলাচল শুরু হয়।
    মুলত, ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকার দাবিতে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ঐদিন কিছু গার্মেন্টস কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের আসতে বাধা দিলে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।গতকাল ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও টঙ্গীতে শ্রমিক বিক্ষোভ হয়। এ সময় শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।