“আজীব দেশে বাস করি,বিচারকরা অবসরে যাওয়ার পর মামলার রায় লিখতে পারেন না মৌলভীবাজারে প্রধান বিচারপতি,সুরেন্দ্র কুমার সিনহা”
আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২জানুয়ারী,আলী হোসেন রাজন: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন বিচারপতিদের অবসরে যাবার পর আর কোন রায় লিখতে দেওয়া হবে না। আমরা আজীব দেশে বাস করি। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিচারকরা অবসরে যাওয়ার পর আর কোন মামলার রায় লিখতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বিচার ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন আমাদের দেশে অতীতে এ রকম রায় দিলেও এখন থেকে আর এ সুযোগ দেওয়া যাবে না। আইন ও সংবিধান রক্ষায় আমাদের সংশোধিত হতে হবে। দেশে এখন গনতন্ত্র আসছে, সংবিধান আছে আইনের শাসন আছে এখন আমরা আইনে চলবো। সেই সামরিক আইনে চলবো না। আইনকে সুসম্মত রেখে চলবো। দেশের সংবিধানের রক্ষক হিসেবে আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কোন কাজ হতে দেওয়া হবে না। আইনজীবিদের কাছে অনুরোধ করেন বিভিন্ন দেশে আইন বই এবং বিচার কার্যক্রম দেখে আইন পেশা পরিচালনা করা জন্য।
আইনজীবিরা দেশের সংবিধান,আইনের শাসন,মানবাধিকার আপনারাই রক্ষার জন্য সোচ্ছার হন। কিন্ত আমার দুঃখ হয় যে যেভাবে আইন পেশা পরিচালনা করার কথা ছিল সেভাবে হচ্ছেনা। আইন পেশার কথা উল্লেখ করে তিনি আইনজীবিদের উদ্দ্যেশ্য করে ভারতীয় নেতা মহাত্বা গান্ধী এবং বিশিষ্ট সলিসিটর জেনারেল ফার্লি নামেরীয় আত্বকাহিনীর বিভিন্ন দিক উল্লেখ করেন বক্তব্যে অরো বলেন আপনারা হলেন সমাজের বিবেকবান মানুষ, আইন পেশাকে রাজনীতিতে ব্যবহার করবেন না। আপনারা দায়ীত্বশীল কাজ করতে হবে,বর্তমানে আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাই জাতীয় ও স্থানীয় বারের নির্বাচনে কে সভাপতি ও কে সেক্রেটারী হবেন এটা রাজনীতিবিদরা নির্ধারন করে দেন। এমনটা হওয়ার কথা নয়, তিনি বলেন, এ সব বিষয়ে আমাকে খুব বেশি পিড়া দেয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিকে দিয়ে আমাদের দেশ আগের চেয়ে অনেক অগ্রসর হচ্ছে। তিনি সারা দেশের আইনজীবিদের আবেদন করে বলেন, বিচারকদের সাথে আপনাদের মনমালিন্য হলে আদালত বয়কট করবেন না। প্রয়োজনে বিষয়টি প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমাকে জানাবেন। আমি সমাধান করতে ব্যর্থ হলে আপনারা আদালত বয়কট করবেন।
দেশের উচ্চ আদলতের বিচারকদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিচারকরা ছুটি পেয়ে সরকারি খরচে বিদেশ চলে যান,অথচ পাঁচ-সাত বছরেও রায় লেখেন না, তিনি বলেন রায় লেখার জন্য আপনারা ৬/৯ মাস ছুটি ভোগ করে রায় লিখেন,দয়া করে অবসরে যাওয়ার পর রায় লিখবেনা। বর্তমান বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা দয়া করে আই ভঙ্গ করবেন না। আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন তাহলে সাধারন মানুষজন কি করবে। বক্তব্যের শুরুতে মিডিয়াকে অনেক শক্তিশালী বলে ধন্যবাদ জানান।
বৃহস্পতিবার ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজার পৌর কমিউনিটি হলে জেলা আইনজীবি সমিতির বার্ষিক নৈশভোজ সভা-২০১৬ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির এর সভাপতিত্বে ও এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম জাবেদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোঃ সফিকুল ইসলাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোতাহির আলী, জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান,মৌলভীবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটএ,কিউ,এম,নাছির উদ্দীন,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল প্রমুখ।
এ ছাড়া নৈশভোজ অনুষ্ঠানে রাজনীতিবীদ, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
