আমারসিলেট24ডটকম,১৮মেঃ গোপালগঞ্জে এক জামাতা পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে শাশুড়িসহ ৪জনকে পুড়িয়ে হত্যাকরেছেন। শনিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ডুমদিয়া গ্রামে এইমর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
এই ঘটনায় নিহতরা হলেন- গ্রামের মৃত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রী ফুড়িয়া বেগম(৬৫), ফুড়িয়া বেগমের দুই নাতি ডুমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয়শ্রেণীর ছাত্র তামিম ( ৮) ও মানিকহার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রআমিনুর সরদার (১৩) এবং নাতনি তনিমা (৫)।
ফুড়িয়া বেগমের মেয়ে শরিফা বেগমের সঙ্গে তার স্বামী পাশ্ববর্তী চরমানিকদহগ্রামের আজাদ মোল্লার কলহের জের ধরে জামাতা আজাদ মোল্লা শাশুড়ির ঘরেপেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে শাশুড়িসহ চারজনকে পুড়িয়ে হত্যা করেন বলেজানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
জানা যায় এর আগে, শনিবার সন্ধ্যায় আজাদ তার শাশুড়িকে ফোন করে আগুন দিয়ে বাড়িঘরজ্বালিয়ে সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছিলেন বলেও জানান ওই সূত্রটি।
পাইককান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনির গাজীর সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকেফুড়িয়া বেগমের ঘরের দরজার বাইরে থেকে শিকল দিয়ে বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুনলাগিয়ে দেয়া হয়। এ সময় ঘরের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা এক কিশোর ও ২ শিশু সহ ফুড়িয়া বেগম, হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান এবং ঘর ও ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্রপুড়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা অগ্নিগদ্ধ তনিমা ও রনি বেগমকে ঘরের জানালা ভেঙে উদ্ধার করেগোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টারদিকে শিশু তনিমার মুত্যু হয়। এছাড়া আরেক বোন রনির অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
পুলিশসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘাতক জামাতা আজাদ মোল্লাকে গ্রেফতারের অভিযান শুরুকরেছে।
আজাদ মোল্লার স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে আমারস্বামী আজাদের সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময় মনোমালিন্য হত। তাই আমি দুই ছেলেকেনিয়ে আমার মায়ের সঙ্গে ডুমদিয়া গ্রামে আমার বাবার বাড়িতে থাকতাম আররাজমিস্ত্রির জোগালি হিসেবে কাজ করে কোনরকমে সংসার চালাতাম। কিন্তু আমার লম্পটপ্রকৃতির স্বামী আমাকে প্রায়ই বিরক্ত করত। ঘটনার দু’দিন আগে আমার কাছেথাকা আমার দুই ছেলে সাব্বির ও বাপ্পীকে কৌশলে আজাদ নিজের কাছে নিয়ে যায়।শনিবার সন্ধ্যায় আজাদ আমার মাকে ফোন করে আগুন দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে সবাইকেপুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। রাতে আমি আমার মা, বোন ও বোনের ছেলে-মেয়েরা ঘরেঘুমিয়ে ছিলাম। গভীর রাতে আমদের বাড়িতে আজাদ এসে বাইরে থেকে দরজার শিকললাগিয়ে বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। আমার মা আগুন আগুন বলে চিৎকার দিলেআমি জানালা ভেঙে বেড়িয়ে যাই। সে সময় ঘরের মধ্য থেকে সবাই দরজা দিয়ে বেরহতে চেষ্টা করলেও বাইরে দিয়ে শিকল দেয়া থাকায় কেউই বের হতে পারেননি।
গোপালগঞ্জের এএসপি সার্কেল মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে এবং অভিযুক্ত আজাদকে গ্রেফতারে জোর অভিযান শুরু করেছে।