আওয়ামীলীগকে একা মাঠে খেলতে দিবে না বিএনপি

    0
    226

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫নভেম্বরঃ রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার আইন পাস করার পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট প্রহণের দিন ধার্য করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এ নির্বাচনে দলগতভাবে বিএনপি অংশ নেবে কি না সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। আজকে দলের নীতিনির্ধারনী কমিটিতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

    এদিকে,  ঘোষিত পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিএনপি নীতিগতভাবে আগ্রহী বলে দলের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আসন্ন পৌর নির্বাচনকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে সেটি মোকাবেলা করতে চায় দলটির নেতারা।

    মাঠ পর্যায়ের নেতাদের যুক্তি হচ্ছে, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত হলে বিএনপির জয় হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা সক্রিয় হবেন। তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন শক্তিশালী হবে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে বিএনপি সমর্থকদের ওপর পুলিশি হয়রানি এবং গণগ্রেপ্তার কমবে এবং নির্বাচন নিয়ে সরকারের নানা ফন্দি ফিকির জনগণের কাছে ধরা পরবে।

    তারা মনে করেন,  সরকার যদি এই নির্বাচনকে প্রভাবিত করে এবং গায়ের জোরে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেয় তাহলে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। এতে আবারো প্রমাণিত হবে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কখনোই সম্ভব নয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্তই ঠিক ছিল।

    অপরদিকে, পৌর নির্বাচনে কারচুপি হলে কিংবা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো ‘পুলিশি প্রহরায়’ কেন্দ্র দখল করে সরকারদলীয় প্রার্থীদের জেতানো হলে বিদেশিদের কাছেও ফের নেতিবাচক বার্তা যাবে। এতে বর্তমান সরকারের অধীনে যে নির্বাচনে যাওয়া যায় না বিএনপির সেই যুক্তি আরো জোর পাবে।

    দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ দুই মাস লন্ডনে অবস্থান করে  ২১ নভেম্বর দেশে ফিরেছেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি তাঁর গুলশান কার্যালয়েও গেছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন, এমন নেতারা বলেছেন, পৌর নির্বাচন যাওয়ার বিষয়ে চেয়ারপারসনকে ইতিবাচক মনে হয়েছে। কারও কারও ভিন্নমত থাকলেও দলের বেশির ভাগ নেতা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। ভালো প্রার্থীর সংকট আছে। কারণ অনেকে কারাগারে, আবার  নতুন করে গ্রেপ্তারও শুরু হয়েছে।

    এ বিষয়ে বিএনপির মূখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন রেডিও তেহরানকে জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবেমাত্র দেশে ফিরেছেন। পৌর নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আজ রাতে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

    তবে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা মনে করেন, তাদের দল নির্বাচনের যাবার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ তারা মনে করছেন, নির্বাচনে না গেলে সরকার ফাঁকা মাঠ পাবে, আবার মাঠ পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আরও হতাশ হয়ে পড়বে।

    এ প্রসঙ্গে খুলনার বরখাস্তকৃত মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, এ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠ হয় এবং গ্রহণযোগ্য হয় নির্বাচন কমিশনকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

    এ প্রসঙ্গে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরীক জাগপা’র সভাপতি শফিউল আলম প্রধান রেডিও তেহরানকে বলেন, জোটনেত্রী তার নিজ দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠক করে পরে জোটের নেতাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করবেন। কারণ, স্থানীয় সরকারের এবারের নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে এবং এটি একটি গুরুদ্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি।

    অবশ্য নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে ভিন্ন মতও আছে। দলের কেউ কেউ মনে করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাই নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া সমান। আবার স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে যারা বিএনপির তাদের বেশির ভাগকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এবার যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের ক্ষেত্রেও একই আচরণ করা হবে। এই ধারণা থেকে কেউ কেউ দলীয়ভাবে নির্বাচনে না গিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন।সুত্রঃইরনা