অভিযোগ সুচি’র প্রত্যাখ্যান,রোহিঙ্গারা বলছে বিশ্বাস করবেন না

    0
    291

    অং সান সুচি তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতের জেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান দেশ ছেড়ে পালিয়েছে এবং এতে সরকারের কোনো হাত নেই। এমনকি ২০১৭ সালে নতুন করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়ার সঙ্গে সেনাবাহিনী জড়িত বলে যে অভিযোগ রয়েছে অং সান সুচি তাও প্রত্যাখ্যান করেছেন।

    গত মঙ্গলবার থেকে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির পক্ষ থেকে গাম্বিয়া সরকারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে।

    পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাতের জেরে রোহিঙ্গা মুসলমানরা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে অং সান সুচি যে দাবি করেছেন তা যে মিথ্যা এটা আন্তর্জাতিক সমাজ খুব ভাল করেই জানে। কারণ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অত্যাচারের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্যই মিয়ানমার সরকার ওই এলাকায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা তদন্ত টিমের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। কিন্তু এতো সীমাবদ্ধতা আরোপের পরও রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর নৃশংস ও বর্বর আচরণের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

    গত বছর জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে এবং এরা বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেনাবাহিনী। ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্থনি কার্তালুস বলেছেন, “আন্তর্জাতিক আইনে সত্যিকারের জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলতে যা বোঝায় তা মিয়ানমারের রাখাইনে ঘটেছে।”

    ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জেরে এ পর্যন্ত ছয় হাজার মুসলমান নিহত, আট হাজার আহত এবং দশ লাখের বেশি মুসলমান বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এসব অপরাধের কথা মিয়ানমার সরকার অস্বীকার করলেও হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচার শুরু হওয়ায় দেরিতে হলেও এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    এ অবস্থায়, আদালত মুসলিম গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের বিচার ও শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে বলে আন্তর্জাতিক সমাজ আশা করছে। অবশ্য শরণার্থীরা দেশে ফিরে গেলেও ফের তাদের ওপর গণহত্যা ও সহিংসতা শুরু হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারকে নিশ্চয়তা দিতে হবে বলে আন্তর্জাতিক সমাজ মনে করছে।র্পাসটুডে