অবাধে বালু উত্তোলন:হুমকির মুখে পরিবেশ

    0
    262

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৯ফেব্রুয়ারী,জহিরুল ইসলামঃ ২০১০ সালের ২০ ডিসেম্বর বালু মহাল আইনের ৬২ ধারার ৪(খ) তে স্পষ্ট উল্লেখ করে, সেতু-কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেল লাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হইলে অথবা আবাসিক এলাকার সর্বনিম্ন ১ কিলোমিটারের মধ্য থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না, যদি না সুনির্দিষ্ট কারন উল্লেখ করে গেজেট প্রকাশিত হয়।

    সরেজমিন অনুসন্ধানে ফুটে উঠেছে এমন চিত্র। নিময়নীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে ড্রেজার মিশিন দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু।

    আর এ কারণে জেলার মনু নদী’র তলদেশ আস্তে আস্তে গভীর হয়ে প্রতিরক্ষা বাধ, নদী পাড়ের ঘর-বাড়ী ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আবার নদীর অনেক জায়গা লিজ না নিয়েও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে প্রভাবশালী একটি মহল।

    অভিযোগ উঠেছে সরকারের এসব নীতিমালার কোনটাই তোয়াক্কা করা হয় না মনু নদী থেকে বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে। অবার নদীর অনেক জায়গা লিজ না নিয়েও ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ ঘন ফুট বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে তারা।

    দেখা যায়, হাজীপুর ইউনিয়নের কঠারকোনা বাজার থেকে কঠারকোনা গ্রামের রাস্তার ১ কিলোমিটারের মধ্যে ছ ৩-৫ ইঞ্চি ব্যসার্ধের পাইপ দিয়ে ৩টি স্থানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্পটগুলো হলো সাবেক ইউপি সদস্য সমুজ আলী, কুতুব আলী ও আব্দুল হাইর বাড়ী সামনে এছাড়াও একই ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ সড়কের মোড়ে ১টি ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে আর পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ছৈদলবাজার এলাকায় বালু মহাল লিজ না নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ১ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

    এসব এলাকায় নদীতে ড্রেজার লাগানোর ফলে নদীর তলদেশ আস্তে আস্তে গভীর হয়ে যার ফলে নদীর প্রতিরক্ষা বাধ, ঘর-বাড়ী ও গাছপালা বিলীন হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে। এমনকি প্রতিদিন ঐসব এলাকা থেকে শতাধিক ট্রাক ও ট্রলি বালু নিয়ে যাওয়ার কারনে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে জনগনের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এবং বালু ঘাটের পাশের গাছ-পালা, বাশ-বেত মরে যাচ্ছে।

    স্থানীয় বেশ কয়েক জন বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বাড়ীর সামনে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে বাড়ীর গাছপালা মারা যাচ্ছে। বালু পরিবহনের ফলে আমাদের কাচা রাস্তাটি চলাচলের অনোপযোগি হয়ে পড়েছে।

    ছৈদল বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কানাইটিকর গ্রামের মনির মিয়ার বাড়ি ও গাছপালা এবং সুজাপুর এলাকার ওয়াব উল্যার বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তার টয়লেট ইতিমধ্যে অনেকটাই নদীতে চলে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যে বাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।

    এদিকে কয়েকমাস পূর্বে কুলাউড়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ছৈদলবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের জেল দিয়েছিলেন বালু ব্যবসায়ী বাদশা মিয়াকে। এসময় উক্ত স্থানে থাকা ৩ টি ট্রাক থেকে বালু আনলোড করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

    এ নিয়ে কুলাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ প্রতিবেদককে জানান, মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা অবৈধ। আমি খোঁজ দিয়ে দেখে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।