অতীতমুখি রাজনীতি পেছনে ঠেলে দিতে পারেঃখালেদা

    0
    255

    আমারসিলেট 24ডটকম,০৯অক্টোবর:সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন  বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সময় এসেছে অতীতমুখী, আবেগাশ্রয়ী, স্লোগানসর্বস্ব ভুল রাজনীতিকে বর্জন করার। সময়ে এসেছে হানাহানি, দ্বন্দ্ব, সংঘাত, ঘৃণা, বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করার। সময় এসেছে রাজনীতির নামে কুৎসা, শঠতা, প্রবঞ্চনা, প্রতারণা, অসত্য প্রচারণা ও হিংসা-বিদ্বেষকে না বলার। গত কাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ব্যবসায়ী পরিষদ আয়োজিত দেশের বর্তমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালেদা জিয়া এসব বলেন। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম ওসমান ফারুক, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ।
    লিখিত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের বর্তমান রাজনীতি হচ্ছে সংঘাতময়, তাই ভবিষ্যৎ হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। ব্যবসায়ীদের সমাবেশে এসে রাজনীতির কথা কেন বলছি। কারণ আধুনিক যুগে রাজনীতিকরা থাকেন জাতীয় নেতৃত্বের আসনে। এ রাজনীতিই অর্থনীতিসহ সমাজের অন্য প্রায় সব অঙ্গন ও তৎপরতাকে স্পর্শ ও প্রভাবিত করে। এ রাজনীতি যদি ঠিক না হয় তাহলের কোনো কিছুই ঠিক মতো চলবে না। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের রাজনীতি হতে হবে সঠিক এবং সুন্দর যুক্তি নির্ভর ও মেধাচর্চিত। এ সমস্যা সঙ্কটের দেশে অতীতমুখি রাজনীতি আমাদেরকে পেছনে ঠেলে দিতে পারে। আমাদের রাজনীতি হতে হবে সমঝোতার ও ঐক্যের, ঘৃণা বিদ্বেষ বা বিভাজনের নয়।
    বিএনপি চেয়ারপার্সন অভিযোগ করে বলেন, গণতন্ত্র চোরাবালিতে হারিয়ে যেতে বসেছে। সবার মিলিত চেষ্টায় রুগ্ন গণতন্ত্রকে সারিয়ে তুলতে হবে। শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ উন্মুক্ত করতে হবে। বর্তমানে দেশে অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকারের আক্রমণাত্মক পরিবেশেও আমরা ধৈর্য ধরে আছি। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দ্রুত সময় বয়ে যাচ্ছে, মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন অনুভব করুন। দেশকে হানাহানি ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে না দিয়ে সমঝোতার পথে আসুন। দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে। তিনি আরো বলেন, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সময়ের চাহিদা ও জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই আসুন, সবাই মিলে সোচ্চার হই। ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করে মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষা করি।
    বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আমরা নতুন ধারার রাজনীতি ও নতুন ধারার সরকার গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্ষমতায় গেলে মেধাকে সর্বোচ্চ যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করব। দুর্নীতি-সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেব না কেউ। সবাইকে নিয়ে গড়ে তুলব জাতীয় ঐক্য। ব্যবসায়বান্ধব সরকার গঠন করব। আমরা নষ্ট রাজনীতি না করে উন্নত রাজনীতির চর্চা করব। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের দলীয়করণের কারণে নাগরিকরা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। হাট-বাজার, বন্দরে দলীয় চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসায়ীরা এখন দেশ ছাড়ছেন। সরকারি ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে দলীয় লোকদের ৯টি ব্যাংক ও ১১টি ইন্সুরেন্সের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এত টাকা তারা কোথায় পেলেন। তিনি আরো বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কিন্তু সে হারে মজুরি বাড়েনি। গরিব মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কৃষক এখন তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পায় না। ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোকে দলীয়করণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংসের চেষ্টা করছে সরকার। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।